ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি বলেছেন, সীতাকুণ্ডের জঙ্গল ছলিমপুরের প্রকৃত ভূমিহীনদের পুনর্বাসন করা হবে। এ কেন্দ্রিক সরকারের মহাপরিকল্পনা রয়েছে। ভূমিদস্যুদের কবল থেকে সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে সরকারের গৃহীত মহাপরিকল্পনাগুলো অতি শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা হবে। যা ইতোমধ্যে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে।
রোববার (২৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তিনি জঙ্গল সলিমপুর পরিদর্শন করেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহাদাত হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। জঙ্গল সলিমপুরে পাহাড়ের কিনারায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় যারা আছে তাদের সরিয়ে পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ সমুন্নত রেখে পরিকল্পিত পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও নগরায়ণে বর্তমান সরকার বদ্ধ পরিকর। পরিবেশ সমুন্নত রেখে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের জন্য সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর একটি আদর্শ স্থান। চট্টগ্রাম শহর থেকে এর দূরত্ব মাত্র ১০কিমি। এখানে ৫টি মৌজায় মোট খাস জমির পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৮০০ একর। এর পূর্ব ও উত্তরে রয়েছে চট্টগ্রাম সেনানিবাস ও বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি, পশ্চিমে বঙ্গোপসাগর, দক্ষিণে চট্টগ্রাম শহর।
তিনি আরও বলেন,কতিপয় ভূমিদস্যু এখানে পাহাড় কেটে পরিবেশ বিপন্ন করে জঙ্গল ছলিমপুরকে অবৈধ বসবাসকারী অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য হিসেবে গড়ে তুলেছে। অবৈধভাবে পাহাড় কেটে তৈরি করা ঝুকিপূর্ণ প্লটগুলো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অপকর্ম করে আসা সন্ত্রাসীদের নিকট বিক্রি করা হচ্ছে। ছলিমপুরকে ঘিরে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এখানে আর কোন ভূমিদস্যু, কোন সন্ত্রাসীর জায়গা হবে না।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুতের প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম, মন্ত্রীর একান্ত সচিব রেজ্জাকুল ইসলাম, উপপরিচালক স্থানীয় সরকার ড.বদিউল আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আল মামুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাজমুল আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল এ) মাসুদ কামাল, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: আশরাফুল আলম, রাউজানের উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, সলিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আজিজ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, জঙ্গল ছলিমপুর ছিল এক সময়ে দাগী সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র। নিজেদের আশ্রয়কে নিরাপদ করতে পাহাড় কেটে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা জলবায়ু উদ্বাস্তুদের কাছে কম দামে সরকারি জমির দখল বিক্রি করতো সন্ত্রাসীরা। আর নগরীর অসংখ্য বস্তীর নেতারা সেখানে বিভিন্ন সমিতির নামে করেছেন পাহাড় উচ্ছেদ। সব কিছু জেনেও চট্টগ্রামের প্রশাসন ছিল নীরব দর্শক।
বর্তমান জেলা প্রশাসন নগর থেকে কারাগারসহ বিভিন্ন দফতর স্থানান্তরের পাশাপাশি বিশ্বমানের একটি হাসপাতাল, আইকনিক মসজিদ, বেতার ভবন, জাতীয় তথ্য কেন্দ্র, নভোথিয়েটার, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। পুরো পরিকল্পনায় ইকো সিস্টেম রক্ষাকেই প্রাধ্যন্য দেওয়া হচ্ছে। থাকছে প্রাণ প্রকৃতির অভয়ারণ্য ইকোপার্কও।
গত ১ জুলাই তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি জঙ্গল ছলিমপুর পরিদর্শন করেছেন।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।