জেলেদের চলার পথে বড় লোকের দেয়াল

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বার আউলিয়া এলাকায় সোনাইছড়ি খাল ব্যবহার করে জেলে সম্প্রাদয়ের লোকজন সাগরের মাছ শিকারে যাওয়া আসা করে। সেই সোনাইছড়ি খাল দখলের অভিযোগ উঠেছে জিরি সুবেদার শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড এবং সিকো স্টিল শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড নামক দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।

এঘটনায় সম্প্রতি সোনাইছড়ি ইউনিয়নের জেলেরা সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেনকে স্মারক লিপি দিয়েছেন। শুক্রবার বেলা ১১ টায় ইউএনও সাহাদাত হোসেন এসি ল্যান্ড ও বিএসবিএর সভাপতি আবুল কাসেমকে সাথে নিয়ে খাল পরিদর্শন করেছেন।

জেলেরা তাদের স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছেন, বঙ্গোপসাগরের সন্দ্বীপ চ্যানেলে মাছ আহরণ তাদের পূর্ব পুরুষের পেশা। বাপ-দাদা আমল থেকে তারা এই পেশায় আছেন। সাগরের মাছ আহরণ করে আমরা প্রায় তিনশত জেলে পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। আর এই সাগরে যাওয়া আসার একমাত্র পথ হলো সোনাইছড়ি খাল, যা জিরি সুবেদার শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড এবং সিকো স্টিল শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড দখল করে তাদের সাগরে যাওয়া আসা বন্ধ করেছে। দুইটি শিপ ব্রেকিং প্রতিষ্ঠানের মঝেই প্রবাহিত সোনাইছড়ি খাল।

জেলে পাড়ার অমল নাথ চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, সাগরে যাওয়া বন্ধ থাকায় আমরা পরিবার নিয়ে অনাহারে দিন যাপন করে আসছি। অতীতেও শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড জাহাজ ভাঙ্গার নামে এই খাল দখল করে আমাদের জীবিকা অর্জনের বাধা দিয়েছে। বর্তমানে তারা তাদের প্রতিষ্ঠান ভরাটের নামে এই খালের উত্তরাংশে প্রায় ৬০ ফুট খাল ভরাট করে আমাদের যাতায়তের পথ চিরতরে বন্ধ করে দিচ্ছে।

ভুক্তভোগী পরিমল জলদাশ বলেন, শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের অব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জমা তারা খালে ফেলে। এতে বিভিন্ন সময় জেলেরা আহত হয়েছেন। ধারালো বস্তুতে জেলেদের পা কেটে যা।

সোনাইছড়ি জেলে পাড়ার সর্দার তপন জলদাশ বলেন, গত দুই মাস আগে সিকো শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড বিদেশ থেকে একটি ৪২ হাজার টন জাহাজ বিসিং করে আমাদের সাগরের যাতায়তের খালের মুখ বন্ধ করে দেয়। আমরা দুই মাস ধরে সাগরে মাছ আহরণ করতে পারছি না। আমরা আমাদের পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে আছি। জেলে সম্প্রদায়ের লোকেরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি, আমাদের প্রতি সুদৃষ্টি দিন।

তবে সিকো শীপ ব্রেকিং ইয়ার্ডের মালিক কামাল উদ্দিনের দাবী তারা খাল দখল করেননি। জিরি সুবেদার শীপ ব্রেকিং ইয়ার্ড খাল দখল করে দেওয়াল নির্মাণ করছে। এই বিষয়ে বিএসবিএ কার্যালয়ে একটি অভিযোগ রয়েছে। তাই তারা আমাদের বিরুদ্ধে জেলেদেরকে দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় উষ্কানিমূলক অভিযোগ দিচ্ছে।

উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেন বলেন, জেলেদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা খাল পরিদর্শন করেছি। উভয় পক্ষ বসে খুব শিগগিরই একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এফএম

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।