ঝাল বেড়েছে কাঁচা মরিচে, দাম কমেনি মাছ-মাংসেও

শীত শেষ হয়েছে সবে। প্রকৃতিতে এখনও কাঁচা মরিচের ভারা মৌসুম। তবে এর মাঝেও বেড়ে গেছে কাঁচা মরিচের দাম। সেই সাথে চড়ে যাওয়া মুরগি ও গরুর মাংসের দরেরও কোন কমতি নেই। আর দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে নাকাল হয়ে পড়েছে জনজীবন।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে সবজি ছাড়া বাকিসব কিছুর দাম ঊর্ধ্বমুখী।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাজারে আকারভেদে বাঁধাকপি ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। শসা প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০, লম্বা ও গোল বেগুন ৬০ থেকে ৮০, টমেটো ২৫ থেকে ৩০, শিম ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

করলা ১১০ থেকে ১২০, চাল কুমড়া প্রতিটি ৫০ থেকে ৬০, লাউ কেজি ৪০ থেকে ৪৫, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০, চিচিঙ্গা ৬০, পটল ৬০, ঢেঁড়স ৬০, কচুর লতি ৬০ থেকে ৭০, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০, বরবটি ১০০ থেকে ১২০ ও ধুন্দুল ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

কাঁচা মরিচের দাম বেগে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। দুই সপ্তাহ আগে কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা।

নগরীর দুই নম্বর গেইট এলাকায় কাঁচা মরিচ বিক্রেতা করিম ভূঁইয়া বলেন, কাঁচা মরিচের দাম গত সপ্তাহ থেকে বাড়তি। এই সপ্তাহে বেড়েছে। কাঁচা মরিচের আমদানি বন্ধ থাকায় বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।

সবজি বিক্রেতা সবুজ বলেন, বাজারে সবজির দাম হাতের নাগালে আছে। তবে দুই থেকে তিনটি সবজির দাম বেড়েছে।

এছাড়া বাজারে পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। বড় রসুনের কেজি ২০০ টাকা। ছোট রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। বাজারে কমেছে আদার দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়।

বাজারে আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। বাজারে খোলা চিনি প্রতি কেজি ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। বাজারে খোলা আটার কেজি ৬০ টাকা। প্যাকেট আটার কেজি ৬৫ টাকা। আগে কেজি ছিল ৭০ টাকা। ২ কেজির প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। দেশি মসুরের ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। বাজারে সয়াবিন তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৭ টাকায়। লবণের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকায়।

বাজারে ফার্মের মুরগির ডিম বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের ডজন ১৯০ টাকা। বাজারে গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। কেজি ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হতো ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়।

বাজারের মাংস বিক্রেতা মো. হাকিম বলেন, গরুর মাংসের দাম বেড়েছে। আমরা আগে যে দামে গরু কিনতাম এখন তা থেকে অনেক বেশি দামে গরু কিনতে হচ্ছে। খামার ও গেরস্তের গরুর মালিকরা বলছেন, গো খাদ্য থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম বাড়তি। এ কারণে গরুর দাম বেশি চান।

গরুর মাংসের দাম আরও বাড়ার কথা উল্লেখ করে এ বিক্রেতা বলেন, গরুর মাংসের দাম আরো বাড়বে। শবে বরাতের আগেই গরুর মাংসের কেজি ৮০০ টাকা হবে।

বাজারে খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়। আগে বিক্রি হতো ৯০০ থেকে এক হাজার টাকায়।

বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মুরগি। ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩১০-৩২০ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকায়।

এদিকে দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতিতে নাকাল হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রতিনিয়ত মূল্যের বৃদ্ধি যেন নিয়ম হয়ে পড়েছে—এমন মন্তব্য করে নগরীর বহদ্দারহাট এলাকায় বাজার করতে আসা মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, দুই দিন পর পর বাজার পরিবর্তন হয়। শীতকালে সবজির দাম, মুরগির দাম কিছুটা কম থাকলেও এখন আবার বেড়ে যাচ্ছে। এভাবর হলে মানুষের জীবনযাপন করা বড় কষ্ট হয়ে পড়বে।

নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় বসবাসকারী এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, আমরা যারা ব্যাচেলর আছি তাদের জন্য ডিম অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে এখন ডিমের দাম যেভাব বাড়ছে তাতে মনে হয় ডিম খাওয়া চিন্তা করাও অপরাধ। আশা করছি খুব তাড়তাড়ি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। তা না হলে মানুষেন জীবন চলা দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।