বৃষ্টি হলেই চট্টগ্রাম নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে—এ যেন চিরন্তন সত্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এত এত উন্নয়ন, স্থাপনার পরেও সমাধান হচ্ছে না জলাবদ্ধতার। প্রতিবারের মতো এবারও ঘূর্ণিঝড় মিধিলির প্রভাবে দিনভর বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আবার কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে চট্টগ্রাম নগরের নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন সড়কে গোড়ালি থেকে হাঁটু পরিমাণ পর্যন্ত পানি দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরের বাকলিয়া, কাতালগঞ্জ, বাদুরতলা, বড়গ্যারেজ, চকবাজার, হালিশহর, মুরাদপুরসহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে পানি জমেছে। এসব এলাকায় দৈনন্দিন প্রয়োজনে বের হওয়া লোকজন ভোগান্তিতে পড়েছেন।
এদিকে, টানা বৃষ্টি হওয়ায় নগরের বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলেছে জেলা প্রশাসন। নগরীর আকবরশাহ এক নম্বর, দুই নম্বর, তিন নম্বর ঝিল ও বিজয়নগরসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়।
এছাড়া আবহাওয়া অধিদপ্তর চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে। এরপর বন্দর নিজেদের নিয়মানুযায়ী দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা ‘অ্যালার্ট-৩’ জারি করে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. ছাইফুল্লাহ মজুমদার জানান, বর্তমানে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কাছে ত্রাণের জন্য ২২ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ২৪৪ মেট্রিক টন চাল, ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকার মূল্যের গো-খাদ্য, সমপরিমাণ মূল্যের শিশুখাদ্য, ৪৭২ ব্যাগ শুকনা খাবার, ১ হাজার পিস কম্বল এবং ৪৭ হাজার ওরস্যালাইন মজুত রয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এসব সামগ্রী দ্রুত বরাদ্দ দেওয়া হবে।
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের প্রস্তুতি বিষয়ে জুম অ্যাপে জরুরি বৈঠক করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলো খোলা আছে। পাশাপাশি শুকনা খাবারসহ প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য নির্দেশনা দেন তিনি।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় সংক্রান্ত আবহাওয়ার ১০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রভাগ দুপুরে খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে মোংলা-পায়রা উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে এবং আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সন্ধ্যা নাগাদ অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।