চট্টগ্রামের মিরসরাই পূর্ব খৈয়াছড়া ঝর্ণা দেখে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হওয়ার পর নানান দিকে নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ। সরেজমিনে দুর্ঘটনার স্থানে গিয়ে দেখা গেছে বিভিন্ন দুর্বলতা।
শনিবার (৩০ জুলাই) পূর্ব খৈয়াছড়া রেল ক্রসিংয়ে গিয়ে দেখা যায়- রেলওয়ের যে টেলিকমিউনিশন সিস্টেম রয়েছে তাতে সংযোগ নেই। সংকেত ব্যবস্থাও অকেজো।
রেলওয়ের একটি সাইনবোর্ডে লেখা দেখা যায়, ‘এই গেইটে কোন গেইট ম্যান নাই। নিজ দায়ীত্বে সকল প্রকার যানবাহন ও পথচারী চলাচল করিবেন এবং যেকোন দূর্ঘটনার জন্য নিজেই দায়ী থাকবেন।’
স্থানীয়রা জানায়, সিগন্যাল লাইট ও বেল নতুন যখন লাগানোর পর কিছুদিন সংকেতের কাজ করতো। ট্রেন আসার সময় হলে বেলে শব্দ করতো তখন। ড্রাইভাররা তখন সড়ক পারাপারে অনেক সর্তক হতো। এখন যে সংকেত আছে তা কাজ করেনা। গেটম্যান না থাকলে অনেক সময় ট্রেনের রাস্তায় গাড়ি উঠে যায়।
নতুন দায়িত্ব পাওয়া গেটম্যান রুপন দাস জানান, আমি নতুন দায়িত্ব পেয়েছি এইখানে। আসার পরে দেখে সরকারি যে ফোন আছে সেইটিও নষ্ট কোনো সংযোগ নেই। ব্যক্তিগত মোবাইলে ট্রেন আসার সময় স্টেশন থেকে কল দিলে আমি সংকেত বার নামিয়ে দিই।
এ বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ব্যবস্থাপক মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী জানান, দুর্ঘটনার বিষয়টি আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। দায়িত্ব পালনের অবহেলার অভিযোগে আগের গেটম্যান সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে রেলওয়ে পুলিশ এবং তাকে গ্রেপ্তারও করেছে। এ জন্য তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৯ জুলাই) মিরসরাই উপজেলার পূর্ব খৈয়াছড়া ঝর্ণা এলাকার লেবেল ক্রসিং ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাস আরোহী ১৭ পর্যটক হতাহতের ঘটনা ঘটে। তাদের মধ্যে নিহত ১১ জনের মরদেহ হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তাদের পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়ার পর তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।
এদিকে গেটম্যানের দায়িত্ব পাওয়া রুপন দাস মূলত ওয়েম্যান-রেলপথ সংস্কারের কাজে নিয়োজিত কর্মচারী। বিষয়টি স্বীকার করে রেলওয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভাগীয় প্রকৌশলী (১) মো. আবদুল হানিফ বলেন, দুর্ঘটনার পর খৈয়াছড়া ঝর্ণা সড়কের রেলগেটের নিয়মিত গেটম্যান গ্রেপ্তার হয়েছেন। লোকবল সংকটের কারণে ওই গেটে প্রশিক্ষত গেটম্যান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই আপাতত ওয়েম্যান দিয়েই গেট রক্ষার কাজ চালাতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
ট্রেনের ধাক্কায় চট্টগ্রামে ১১ পর্যটক নিহত
মিরসরাই ট্যাজেডি—গেটম্যান সাদ্দাম আটক
মিরসরাইয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতদের সবাই চিরনিদ্রায় শায়িত
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।