তুমব্রু সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে রোহিঙ্গা কিশোর নিহত

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্যরেখায় পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে ওমর ফারুক (১৭) নামে এক রোহিঙ্গা কিশোর নিহত হয়েছে।

নিহত ফারুক তুমব্রু সীমান্তে শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গা মো. আয়ুবের ছেলে। রোববার সকালে সীমান্তের পূর্বে পাহাড়ি এলাকা থেকে রোহিঙ্গাদের সহযোগিতায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম শূন্য রেখায় অবস্থিত রোহিঙ্গা শিবিরের মাঝি আবদুর রহিম বলেন, ‘ওমর ফারুক ও মো. আবদু ইয়্যা নামে দুই রোহিঙ্গা রোববার সকালে তুমব্রুর মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার পাহাড়ি ছড়ায় মাছ শিকারে বের হয়। এসময় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে ওমর ফারুকের দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে সে মারা যায়। আরেকজন প্রাণে রক্ষা পায়। পরে তার মাধ্যমে খবর পেয়ে ফারুকের মরদেহ উদ্ধার করে সীমান্তবর্তী একটি কবরস্থানে দাফন করা হয়।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গার মৃত্যুর খবর গোয়েন্দাদের কাছ থেকে শুনেছি। বিষয়টি কতৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’

বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম তারিক বলেন, ‘মাইন বিস্ফোরণের বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’

এর আগে গত ১৭ সেপ্টম্বর শূন্য রেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া মর্টারশেলের আঘাতে মোহাম্মদ ইকবাল (১৮) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হন। এর আগের দিন (১৬ সেপ্টেম্বর) তুমব্রু সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে অন্য থাইন চাকমা নামে এক বাংলাদেশি যুবক আহত হন। এ ঘটনায় আরও ছয় জন আহত হন।

পাচঁ বছর ধরে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্য রেখায় আশ্রয় শিবির গড়ে বসবাস করছে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত চার হাজার ২০০ জনের বেশি রোহিঙ্গা। আশ্রয় শিবির ঘেঁষে মিয়ানমারের কাঁটাতারের বেড়া ও রাখাইন রাজ্যের একাধিক পাহাড় রয়েছে। পাহাড়ের ওপর বিজিপির একাধিক তল্লাশি চৌকি রয়েছে।

শূন্য রেখার রোহিঙ্গা নেতা আবদুর রহিম বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যাতে মিয়ানমারে ফিরতে না পারে সেজন্য বাংলাদেশ-মিয়ানমান সীমান্তজুড়ে বিজিপি স্থলমাইন পুঁতে রাখে। এসব মাইনে গত পাঁচ বছরে ছয় জন রোহিঙ্গা মারা গেছে। শূন্য রেখার রোহিঙ্গারা সব সময় আতঙ্কে থাকে।’

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।