দিনমজুরকে সাজা দিয়ে বিচারিক ক্ষমতা হারালেন রামগড়ের ইউএনও

ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার দিনমজুর আবুল কালাম ও রুহুল আমিনকে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাতকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা থেকে বিরত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। জনপ্রশাসন সচিব ও খাগড়াছড়ির ডিসিকে এই নির্দেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে।

রোববার (২০ নভেম্বর) বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সারোয়ার পায়েল। ইউএনওর দেওয়া সাজা কেন অবৈধ হবে না এবং দুই দিন মজুরকে কেন ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজিম সাংবাদিকদের জানান, দুই দিনমজুরকে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় আদালত রুল জারির পাশাপাশি ইউএনও খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাতকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখতে জনপ্রশাসন সচিব ও খাগড়াছড়ির ডিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারবেন না।

খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুজন দিনমজুরকে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় গত ২৩ অক্টোবর ইউএনও আরাফাতের ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতা কেড়ে নিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে ওই দুই দিনমজুর আবুল কালাম ও রুহুল আমিনকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। আবুল কালাম ও রুহুল আমিন এ রিট দায়ের করেন।

গত ১ আগস্ট রামগড় উপজেলা প্রশাসন ও বিজিবি বিরোধপূর্ণ জায়গায় বেড়া দেওয়ার কাজ করতে গেলে ইউএনও খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত দুজন দিনমজুরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেন। এ সময় তিনি দিনমজুর দুজনকে পাঁচদিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এই ঘটনায় গত ৫ আগস্ট একটি দৈনিক পত্রিকায় ‘প্রশাসন-বিজিবি বিরোধ: কারাগারে দিনমজুর’ শিরোনামে প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, জমি নিয়ে বিরোধ চলছে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা প্রশাসন ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মধ্যে। আর সেই বিরোধের সঙ্গে-পাঁচে না থেকেও কারাগারে যেতে হলো দুই দিনমজুরকে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।