দেশের অর্থনীতিবিদরা বর্তমানে অর্থনীতিকে কঠিন হিসাবে উপস্থাপন করে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. আতিউর রহমান।
বুধবার (১০ জুলাই) বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উদ্যোগে আয়োজিত “আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় তরুণ লেখক সম্মেলন ২০২৪” এর সমাপনী দিনে প্রধান আলোচকের বক্তব্য প্রদানকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিবিদরা বর্তমানে অর্থনীতিকে কঠিন হিসাবে উপস্থাপন করে। কিন্তু আমি এটাকে একেবারে সহজভাবে উপস্থাপন করেছি। ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসারের কারণে বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়ে যাচ্ছে। এরকম একটা সময়ে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে এতো তরুণ লেখক শিক্ষার উদ্দেশ্য একত্রিত হয়েছে যা সত্যি গর্বের। যারা লেখক হবে তারা একাডেমিক ক্লাসে শিক্ষা নিবে কিন্তু সমাজের চারপাশ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
তরুণ লেখকদের উদ্দেশ্যে ড. আতিউর রহমান বলেন, ভালো লেখক হতে হলে প্রচুর ধর্য্যের প্রয়োজন। কোন একটা বিষয় লেখার পর নিজেই সংশোধন করতে হবে, লেখেই জমা দেয়া যাবে না। এমন লেখা লেখতে হবে যাতে পাঠকের মন ছুঁয়ে যায় এর জন্য বিভিন্ন লেখকের বই পড়ে অনুপ্রেরণা নিতে হবে। লেখার জন্য তোমাদের সুন্দর পরিবেশ খুঁজে বের করতে হবে। প্রিয় লেখকদের জীবনী পড়তে হবে। ভালো লেখক হতে নিজের সুন্দর একটি দৃষ্টিকোণ তৈরি করতে হবে। গঠনমূলক সমালোচনা জীবনে গ্রহণ করতে হবে এতে তোমার ভুলগুলো সংশোধন করতে পারবে। লেগে থাকো তবেই লেখক হতে পারবা।
এদিন লেখার মেলবন্ধনে, একত্রিত হও লেখক বন্ধু—স্লোগানকে সামনে রেখে সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠান শুরু হয়। তরুণ কলাম লেখক ফোরাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক গিরেন্দ্র চক্রবর্তী ও কারিশমা ইরিন সঞ্চালনায় ও বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মো. ইত্তেখারুল ইসলাম সিফাতের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন চবির উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেনু কুমার দে, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরী।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন একুশে পদক প্রাপ্ত সাংবাদিক আবুল মোমেন, চবি বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শেখ সাদী, কলামিস্ট ফারুক ওয়াসিফ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, লেখক হতে নিজস্ব অভিজ্ঞতা সেইসাথে নিজস্ব অনুশীলনে থাকতে হবে। লেখক কে প্রচুর পরিমানে বই এবং নিউজ পেপার পড়তে হবে। একজন লেখকের নিজস্ব স্টাইল থাকতে হবে। পৃথিবীর বিখ্যাত লেখক সেইসাথে রাজনীতি ব্যক্তিদের বই পড়তে হবে। আমাদের দেশে অনেক ভালো লেখক রয়েছে ওনাদের বই পড়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। তোমাদের পরিশ্রম করতে হবে এবং নেটওয়ার্কিং বাড়াতে হবে। এতে করে আজ বা কাল তুমি লেখক হতে পারবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, তরুণরা হলো ফুলের কলির মতো পাপড়ি হয়ে আস্তে আস্তে ফুটবে। আমরা একসময় থাকবো না তবে তরুণরা থেকে যাবে। আপনাদের বয়সটা আকাশে উড়ার মতো আপনারা লেখনির মধ্যে সেটাকে আরো উড়াবা। আপনি যা লেখেন তারমধ্যে যদি সংকীর্ণমনা থাকে তাহলে কখনো আপনার লেখা মানুষের মুক্তির পাথেয় হবে না। পৃথিবীর বিখ্যাত মনিষীদের বইগুলো আপনাদের অবশ্যই পড়তে হবে। বিভিন্ন লেখক এবং ব্যক্তিদের আত্মজীবনী পড়তে হবে। আপনারা পড়বেন এবং লেখবেন মানুষের মুক্তির জন্য।
অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, সমাজের বিভিন্ন বিষয় লেখকরা নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি কলামের মাধ্যমে তুলে ধরেন। মূলত লেখকের দর্শন চিন্তাশক্তি অনুভূতি লেখনির অনুপ্রকাশ। আমাদের ভবিষ্যত চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের তথ্য প্রযুক্তির পাশাপাশি জ্ঞান অর্জন করতে হবে। তোমাদের অনুশীলন করে চারপাশ দেখে এবং পড়ে শিখতে হবে। বিশ্বের কোনো দেশে মাদক এতে সহজলভ্য না। আমাদের দেশের যুবসমাজ মাদকের প্রতি আসক্ত হচ্ছে। আপনাদের মাদকের প্রতি সচ্চার এবং প্রতিরোধ করতে হবে।
এছাড়াও এদিন অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের সভাপতি মো: সাখাওয়াত হোসেন, দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের উপ-সম্পাদক কাজী আবুল মনসুর, প্রাবন্ধিক-সাহিত্যক ও কলামিস্ট কামরুল হাসান বাদল।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।