‘দেশ ইউরোপিয়ান দেশগুলোর চেয়ে অনেকদুর এগিয়ে গেছে’

নারী দিবসের আলোচনা সভায় এডিসি

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. আবু রায়হান দোলন বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন সফল নারী ও নারী সমাজের উন্নয়নের জন্য বিশ্বের কাছে এখন রোল মডেল। তাঁর হাত ধরেই বাংলাদেশ অদম্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। নারীদের বাদ দিয়ে দেশের কাঙ্খিত উন্নয়ন কখনো সম্ভব নয়। এ বিষয়টি বিবেচনায় এনে সরকার নারীদের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা ক্ষমতায় থেকে নারীর ক্ষমতায়নে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেয়ার কারণে এ দেশ ইউরোপিয়ান দেশগুলোর চেয়ে অনেকদুর এগিয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (৮ মার্চ) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম জেলা শিশু একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন, জাতীয় মহিলা সংস্থা ও মহিলা বিষয়ক উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে- ‘টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য’। চট্টগ্রামে নারী উন্নয়ন কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট সরকারী-বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাসমূহের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সকাল ১০টায় শিশু একাডেমি মিলনায়তনে নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় এডিসি বলেন, দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। নারীরা কখনো পুরুষদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। সরকারের আন্তরিকতা ও নিরলস প্রচেষ্টার কারণে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে নারীরা এখন সব পেশায় সর্বক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হচ্ছে। আগামী ২০৩০ সালে এসডিজি অর্জন ও ২০৪১ সালের মধ্যে সুখী-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ গড়তে নারী-পুরুষ সকলের অংশগ্রহণ জরুরী।

তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন শতভাগ নিশ্চিত করতে হলে নারীর প্রতি সহিংসতা, নারী-শিশু নির্যাতন, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ রোধে সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরা স্বাবলম্বী হলে সমাজ থেকে অন্যায়-অবিচার দূর হবে।

আলোচনা সভায় অন্যান্য বক্তরা বলেন, বর্তমানে নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বের সেরা দশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান। নারী শিক্ষার উন্নয়ন হলে বদলে যাবে সমাজ। সমাজ ও দেশের উন্নয়নে নারীদের অবদান অনেক বেশি। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামেও নারীদের অনেক আত্মত্যাগ রয়েছে। পোশাক শিল্পেও নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। একজন নারীকে কখনো খাটো করে দেখা উচিত নয়। জেন্ডার সমতায় বিশ্বের ১৪৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং এ দেশের অবস্থান ৪৭তম। এদেশে নারীরা যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তা বিশ্বের মধ্যে নজির সৃষ্টি করেছে। প্রধানমন্ত্রীর ১০টি বিশেষ উদ্যোগেও নারীর ক্ষমতায়ন জড়িত। স্বাবলম্বী হয়ে আর্থিক ও বস্তুগত প্রবৃদ্ধির মাধ্যমেই নারীদের এগিয়ে যেতে হবে।

বক্তারা আরো বলেন, এদেশে নারী- পুরুষের সমতা আছে বলেই দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে ও সমতার ভিত্তিতে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা গেলে জাতীয় অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে। নারী-পুরুষ ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সরকারের উন্নয়নের মহাসড়কে সবাইকে সামিল হতে হবে।

চট্টগ্রাম মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাধবী বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও স্টোর কিপার জান্নাতুল ফেরদৌসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চট্টগ্রাম জেলা কর্মকর্তা শাহানা আকতার, সদস্য শিল্পী কল্পনা লালা ও মহিলা সহায়তা কর্মসূচী চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক দিলরুবা বেগম।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নারী নেত্রী দীপিকা বড়ুয়া, টিআইবি প্রতিনিধি মোহাম্মদ ফোরকান, স্বপ্নীল ব্রাইট ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী সিকদার, প্রতিবন্ধী আইন সহায়তা কেন্দ্র সিডিডি’র প্রতিনিধি নারগীস আকতার, ব্র্যাকের জেলা সমন্বয়ক মো. আবদুর কাহান ও ইপসা প্রতিনিধি ফারহানা ইদ্রিছ। আলোচনা সভায় চট্টগ্রাম মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরসহ বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী ও নারী উন্নয়ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এফএম

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।