প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা যদি বাংলাদেশকে রক্ষা করতে চাই তাহলে আমাদের নদীগুলোকে বাঁচাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সোমবার (৪ ডিসেম্বর) তাঁর কার্যালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষে ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর নাব্যতা রক্ষা ও দূষণ রোধে প্রণীত মহাপরিকল্পনার আলোকে সমীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প গ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে এক সভায় একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতায় আসার পর তাঁর সরকারের লক্ষ্য ছিল নদী রক্ষা, নাব্যতা বজায় রাখা এবং দূষণ থেকে রক্ষা করা। তিনি স্মরণ করেন, তাঁর সরকারের প্রথম মেয়াদে নদী ড্রেজিং শুরু হয়েছিল এবং জমি পুনরুদ্ধারের জন্য পলিমাটি ব্যবহার করা হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ড্রেজিং করতে হবে এবং নাব্যতা বজায় রাখতে হবে। নদী ভাঙন রোধকল্পে আমাদের ড্রেজিং করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নদীর ধারে যেসব শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠে সেগুলোর বর্জ্য সাধারণত নদীতে যায়। স্যুয়ারেজ লাইনের সমস্ত বর্জ্যও নদীতে যায়, যার ফলে দূষণ বাড়ছে। আমরা যাই করি না কেন, প্রথমেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কথা আমাদের মনে রাখতে হবে। দূষণের কারণে বুড়িগঙ্গা নদী থেকে দুর্গন্ধ আসা খুবই বেদনাদায়ক। রাজধানীর আশপাশের নদীগুলোকে বাঁচাতে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি আরো বলেন, নদী শাসনের জন্য নদীর গভীরতার কথা বিবেচনায় রাখতে হবে এবং আমাদের অবশ্যই বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের লক্ষে নদীর পাশাপাশি একটি বাফার জোন তৈরি করতে হবে। সরকার প্রধান পরিবেশ সংরক্ষণের কথা মাথায় রেখে যে কোনো উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টার ওপরেও জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমি ক্ষমতায় আসার পর থেকে সবাইকে সব নগরীর জন্য পরিকল্পনা তৈরি করতে বলেছি। আমরা যে পরিকল্পনাই গ্রহণ করি না কেন সেখানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পানির প্রবাহ সঠিকভাবে বজায় রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে অতীতে দেশের উন্নয়ন কর্মসূচি পরিকল্পিতভাবে হয়নি। শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে এটি ঘটেনি এবং এমনকি ১৯৭৫ সালের পর অবৈধ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলকারী যারা অস্ত্র নিয়ে সংবিধান লঙ্ঘনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিল তারাও দেশের সামগ্রিক সমন্বিত ও পরিকল্পিত উন্নয়নে মনোযোগ দেয়নি। ফলে পরিবেশগত সমস্যাগুলো উপেক্ষিত হয়েছে এবং নদীগুলোও দখল করা হয়েছে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।