নগরের পর ডুবছে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, বান্দরবান শহরও—সেনা মোতায়েন

লাগাতার বৃষ্টিতে ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে চট্টগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি। নিচু এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে পানির নিচে, পাহাড়ি এলাকায় ঢলে পড়ছে মাটি। গতকাল বন্যার পানিতে ডুবে এক শিক্ষার্থী নিহতের পর আজ নগরীর সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে কক্সবাজার ও বান্দরবানে পৃথক স্থানে পাহাড়ধসে কয়েকজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আর পরিস্থিতি মোকাবেলায় চট্টগ্রাম ও বান্দরবানে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আইএসপিআর জানায়, চট্টগ্রাম এবং বান্দরবানে বন্যা পরিস্থিতি ও ভূমিধস মোকাবিলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। টানা কয়েকদিন ধরে চট্টগ্রামে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। এতে নগরের বিভিন্ন নিচু এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে এবং বহু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া একাধিক স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনাও ঘটেছে।

এদিকে টানা বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম নগরীর নিচু এলাকা এখনও ডুবে আছে। এবার বন্যার পানি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামেও। মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম কক্সবাজার সড়কের আংশিক পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

চন্দনাইশ থেকে ব্যাংকার আরিফ উদ্দিন জানান, সাঙ্গু নদীর ঢলে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চন্দনাইশ বাগিচাহাট থেকে দোহাজারী অংশে।

তিনি আরও বলেন, স্মরণকালের রেকর্ড পরিমাণ পানি এখন কেরানীহাটে। প্রায় কোমর পরিমাণ পানি কেরানীহাটেই। চন্দনাইশ, সাতকানিয়ার প্রায় ৯৫ ভাগ এলাকা পানিতে প্লাবিত। সাতকানিয়ার কেওছিয়া, পুরানগড়, বাজালিয়া, ছদাহা, কাশিইয়াশ ইউনিয়নে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হোক।

বান্দরবান শহরের অবস্থা আরও ভয়াবহ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার) অফিস শেষে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসায় ফিরেছি। শহরের বিল্ডিংগুলো নিচ তলা ডুবে দোতলা ছুঁই ছুঁই পানি। বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। মোবাইলের নেটওয়ার্কও বন্ধ। এক প্রকার মানবিক বিপর্যয়ের মুখে বান্দরবানবাসী।

জানা গেছে, কক্সবাজারে পৃথক স্থানে পাহাড়ধসে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন শিশু ও একজন নারী। সোমবার বিকালে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ও চকরিয়া উপজেলার পূর্ব ভিলিজার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

এদিকে, বান্দরবান সদরে অতিবৃষ্টিতে পাহাড়ধসে একই পরিবারের মা-মেয়ে নিহত হয়েছেন। প্লাবিত হয়েছে হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি। বান্দরবান-থানচি সড়কের ১২ মাইল এলাকায় পাহাড়ধসে সড়কে গাছ পড়ে বান্দরবান থেকে রুমা-থানচি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ৩৪২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বান্দরবানে। বৃষ্টিপাত এখনও অব্যাহত রয়েছে। বৃষ্টিপাতে পার্বত্য জেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটেছে। বুধবার থেকে বৃষ্টি কমার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।