নাগরিক সেবার মান বাড়তে নির্দেশ চসিক মেয়রের

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে (চসিক) আর্থিকভাবে সচ্ছল করার পাশাপাশি নগরের অবকাঠামোগত উন্নয়নে প্রকৌশল ও রাজস্ব বিভাগের নাগরিক সেবামূলক কাজের মান বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) টাইগারপাসের চসিক কার্যালয়ে প্রকৌশল ও রাজস্ব সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মেয়র এ নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, নগরের অবকাঠামোগত সক্ষমতার সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন জড়িত। এজন্য প্রকৌশল কাজের মান বাড়াতে হবে। ঠিকাদাররা যেসব নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করছে তা পরীক্ষা করে নিতে হবে। কেউ নিম্নমানের কাজ করলে বিল দেব না। যে সব সড়ক ভেঙে গেছে সেগুলো সংস্কারের দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।

চসিকের আয় বাড়াতে জোর দিয়ে মেয়র বলেন, প্রতিদিন যে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলো থেকে সার উৎপাদন করে আয় করা যায় কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। এজন্য সংগৃহীত বর্জ্য থেকে পচনশীল জৈব পদার্থগুলো আলাদা করতে হবে। এরপর সেই সংগৃহীত জৈব পদার্থ থেকে সার উৎপাদন করা সম্ভব। এছাড়া যে সব মেডিকেল বর্জ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলো প্রক্রিয়া করে প্লাস্টিকের দানায় রূপান্তর করে বিক্রি করে আয় বাড়ানো সম্ভব। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের যে সব স্থাপনা থেকে আয় আসা সম্ভব সেগুলো কাজে লাগাতে হবে।

নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বর্জ্যের বিন নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা থেকে শুরু করে ট্রেড লাইসেন্স বাতিলসহ যা করা প্রয়োজন করতে হবে।

বারইপাড়া খাল খনন প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়ে মেয়র বলেন, নগরের জলাবদ্ধতা দূর করার ক্ষেত্রে বারইপাড়া খাল প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ প্রকল্প শেষ না হওয়ায় জনগণ খুব কষ্টে আছে৷ দ্রুত এ প্রকল্পটি শেষ করতে হবে। নগরের সড়ক আলোকায়ন বাড়াতে হবে। নগরবাসীর অন্যতম প্রধান অভিযোগ সড়কে বাতি না থাকা। সড়কে আলোকায়ন নিশ্চিত করতে হবে, ব্যবহার করতে হবে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতি।

এ সময় প্রধান প্রকৌশলীকে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার নির্দেশ দেন মেয়র। নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ওয়ার্ডের শীর্ষ ১০০ জন করে গৃহকরখেলাপিদের তালিকা করার নির্দেশ দিয়ে মেয়র বলেন, প্রাথমিকভাবে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ওয়ার্ডের শীর্ষ ১০০ জন করে গৃহকরখেলাপিদের তালিকা ১ সপ্তাহের মধ্যে জমা দিন। আমি রোববার থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যাব। এদের বকেয়া গৃহকর দিতে বলব। কেউ আর্থিক সংকটে থাকলে আলাদা বিষয় তবে কেউ গায়ের জোরে কর না দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

চসিকের যে সব মার্কেট আছে, হাট-বাজার-ঘাট আছে সেগুলো থেকেও রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করতে হবে। কোথাও কোনো মামলা থাকলে জানাবেন, সেগুলোও নিষ্পত্তি করতে উদ্যোগ নেব। হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানোর পরিবর্তে যারা কর দিচ্ছে না তাদের কাছ থেকে কর আদায় নিশ্চিত করতে হবে। কর আদায়ে অটোমেশনের মাধ্যমে নাগরিকদের কর প্রদান সহজ করতে হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবুল কাশেম, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানি, এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি মো. আনিসুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, জসিম উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী আশিকুল ইসলাম, আনোয়ার জাহান, রিফাতুল করিম, তাসমিয়া তাহসিন, নগর পরিকল্পনাবিদ আবদুল্লাহ আল ওমর প্রমুখ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।