পাঁচপুকুরিয়া-সিদ্ধাশ্রম সেতু: পাল্টে যাবে হালদা নদীর দু’পাড়ের জীবনধারা

শুষ্ক মৌসুমে অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো ও বর্ষায় দড়ি টানা নৌকায় ঝু্ঁকি নিয়ে আসা-যাওয়া করতে হতো চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির পাঁচ পুকুরিয়া ও পূর্ব সুয়াবিল গ্রামের হাজারো বাসিন্দাদের। এতে প্রায়ই ঘটতো ছোট-বড় দুর্ঘটনা। তবুও নিরুপায় হয়ে হালদা নদী পারাপার হতে হতো সুয়াবিল ইউনিয়নের সিদ্ধাশ্রম সুন্দরপুরের পাঁচপুকুরিয়া ও নাজিরহাট পৌরসভার অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষদের। দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো হালদায় একটি সেতু নির্মাণ। অবশেষে জনসাধারণের সমস্যা লাঘবে স্থানীয় সাংসদ সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর চেষ্টায় হালদা নদীতে নির্মিত হচ্ছে সেতু। আর এতে হালদা নদীর দু’পাড়ের চিত্র পাল্টে যাবে বলে মতামত সংশ্লিষ্টদের।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি)র ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে ফটিকছড়ির পাঁচপুকুরিয়া-সিদ্ধাশ্রম সড়কের চেইনেজ হালদা নদীর ওপর ২৪০ মিটারের দীর্ঘ এই সেতু। যার প্রস্থ হবে ২৪ ফুট। সেতুর সাথে নির্মিত হবে প্রায় ১ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। সেতু নির্মাণ হলে এতে দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগে দূরত্ব কমবে ২৫ কিলোমিটার। সুয়াবিল-সুন্দরপুর ইউনিয়নের ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে হালদা নদী। নদীর দুইপাড় হয়ে থাকে বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কৃষকদের উৎপাদিত সবজি নিয়ে পড়তে হয়েছে নানা বিড়ম্বনায়। যোগাযোগ ব্যবস্থার দুরবস্থা ও হালদার ওপর সেতু না থাকায় সবজির ন্যায্যমূল্য পান না ওই অঞ্চলের কৃষকরা। ১০-১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে কাঁধে করে বাজারে সবজি বিক্রি করতে হয় তাদের। সেতুটি নির্মাণ হলে তাদের দুর্ভোগ লাঘব হবে, তাদের কষ্টে উৎপাদিত কৃষি পণ্যের ন্যায্য দাম পাবে কৃষকরা। সেই সাথে বদলে যাবে সুন্দরপুর,সুয়াবিল ইউনিয়নের মানুষের জীবনযাত্রা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও কলেজ ছাত্র সৈয়দ মুস্তাকিম বলেন, আমার মতো এলাকার অনেক শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সেতু পার হয়ে স্কুল-কলেজে যেতে হয়। বর্ষাকালে নদী পার হতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়। এখন নতুন সেতু নির্মাণ হবে, এতে আমাদের দুর্ভোগ কমবে; যাতায়াত সহজ হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বলেন, হালদা নদীর পাড়ে উৎপাদিত হতো শীতকালীন সবজিসহ নানা কৃষি পণ্য। সেতুর অভাবে কৃষকের কষ্টে উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে ব্যয় বেড়ে যেতো। যার ফলে কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম পেতো না। সেতুটি নির্মাণ হলে কৃষকরা অনেক বেশি উপকৃত হবে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী তন্ময় নাথ বলেন, প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করবে এলজিইডি। দুই মাস পর কাজ শুরু হতে পারে। এ সেতুর মাধ্যমে সুয়াবিল এবং পৌরসভার একাংশের সঙ্গে ফটিকছড়ির লিংক রোড হবে। এতে কৃষিপণ্য সহজে বাজারজাত করা যাবে এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।