বোনের অসুস্থতার চিকিৎসার জন্য বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে রাঙামাটির নানিয়ারচর সদর বাজারের সুজন টেলিকমে এসেছেন মিতা চাকমা ও তার ছোট বোন। উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের মংখোলা গ্রাম হতে পায়ে হেঁটে প্রায় দেড় ঘন্টা পথ পাড়ি দিয়েছেন তারা। এর কারণ যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম চেঙ্গি নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায় কোন নৌকা চলছে না। অন্য কোন যোগাযোগের মাধ্যম না থাকায় বাধ্য হয়ে পায়ে ভর করে এতটুকু পথ আসতে হয়েছে দুই বোনের।
মিতাদের মতো এরকম আরও অসংখ্য সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত এই পথ পাড়ি দিচ্ছেন পায়ে হেঁটে। এতে করে যেমন ভোগান্তি বেড়েছে তেমনি অপচয় হচ্ছে শ্রম ও সময়। দূর-দূরান্ত থেকে কৃষক বা সাধারণ মানুষ এভাবেই উপজেলা সদরে যাতায়াত করছেন। মূলত নদী শুকিয়ে যাওয়ায় এমন ভোগান্তি হলেও স্থানীয়রা পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিকল্প সৃষ্টির দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, নানিয়ারচর উপজেলায় নির্মিত পার্বত্য অঞ্চলের সবচেয়ে বড় এই সেতু থাকায় সড়ক যোগাযোগে হয়েছে আমূল পরিবর্তন। পানি থাকা অবস্থায় নৌকা করেই আসা যাওয়া করেন গ্রামের মানুষেরা। বছরের প্রায় আট থেকে নয় মাস এই চেঙ্গি নদীতে পানি থাকলেও এ বছর বৃষ্টি খুবই কম হওয়াতে পানি বাড়ছেই না। যার ফলে সড়ক হতে দূরের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষরা চলচলে বেশ ঝামলায় পড়েছেন।
স্থানীয়রা বলেন, এই উপজেলার কদমতলি, ভাংগামুরা, কাঠালতলি, গর্জন তলি, নাংগেল পাড়া, মংখোলোপাড়া, গুইলসা ছড়ি, নোয়াদম পাড়া, সাপমারা, নিচপুলি পাড়া, খূল্যাংপাড়াসহ বেশ কয়েকটি এলাকার সাথে উপজেলা সদরের ও সড়কের সাথে নৌ পথ ছাড়া অন্য কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। কাজেই চেঙ্গী নদীতে পানি না থাকার সময়কালে ছয়কুড়ি বিল ও মাইচছড়ি বিল হেঁটে চলাচল করতে হয় সেখানকার মানুষের।
এ বিষয়ে বুড়িঘাট ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান কল্পনা চাকমা বলেন, চেঙ্গী নদীতে পানি না থাকলে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম হতে মানুষের উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। এসব গ্রামগুলোর সাথে যদি মূল সড়কের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্ভব হয় তবে মানুষদের চলাচলে ও তাদের উৎপাদিত ফসলসমূহ বাজারে নিয়ে আসতে সুবিধা হবে। ফলে অর্থনৈতিক চাঙ্গাও দেখা যাবে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।