পাহাড়ের হাতির পাল লোকালয়ে—রাতভর তাণ্ডবে লোকজনের ঘুম হারাম!

রাঙামাটির লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নে একটি বন্য হাতির দল লোকালয়ে ঢুকে ঘর-বাড়ি ভাংচুর ও ধান নষ্ট করেছে।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দিবাগত রাতে বন্য হাতির দল এ তাণ্ডব চালিয়েছে বলে জানিয়েছন ক্ষতিগ্রস্থরা।

বগাচতর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল বশর জানান, গত কয়েক বছর ধরে বন্য হাতির দল বগাচতরের বিভিন্ন এলাকায় আসা-যাওয়া করছে। কিছুদিন পরপরই হাতির দল আক্রমণ চালাচ্ছে। গত রাতের তাণ্ডবে ১ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব রাঙ্গীপাড়া গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর আলমের বসতঘর ভাংচুর ও ঘরে রাখা ধান নষ্ট করে প্রায় লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিনি আরও জানান, রাতের আক্রমণ প্রতিহত করার চেষ্টাও করে স্থানীয়রা। কিন্তু বন্য হাতির তাণ্ডব নতুন নয়। প্রায় সময় গ্রামের ফসল ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি করছে। খাবারের খোঁজে পাহাড় থেকে লোকালয়ে আসে হাতিগুলো। হাতির ভয়ে এখন রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে এখানকার সবার।

স্থানীয় বাসিন্দা খোকন মিয়া জানান, রাতের ভাংচুরের শব্দ কানে আসে। দরজা খুলে দেখি বাইরে বিশালাকারের একটি হাতি পাশের বাড়ি ভাঙছে। আর ঘরে ভেতরে থাকা ধানের বস্তা টেনে বাইরে বের করতে দেখে ভয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিই।

স্থানীয়রা আরো জানান, উপজেলার পাহাড়ি সীমান্ত চষে বেড়ায় বন্য হাতির দল। এতে মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেই নেমে আসে লোকালয়ে। নষ্ট করে আমন ধান ও সবজি ক্ষেত। অর্ধেক খেয়ে এবং পা দিয়ে পৃষ্ট করে ধান ও সবজি ক্ষেত নষ্ট করে। তখন ফসল ও বাড়িঘর রক্ষা করতে এলাকাবাসী মশাল জ্বালিয়ে ঢাকঢোল পিটিয়ে হইহুল্লোড় করে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে তাতে কোন কাজ হচ্ছে না।

পাবলাখালী (লংগদু) রেঞ্জের বন কর্মকর্তা সজিব মজুমদার জানান, পাহাড়ি অঞ্চলে খাদ্যের অভাবে বন্যহাতি লোকালয়ে চলে আসছে খাবারের খোঁজে। ঘর ভাংচুরের ঘটনা শুনেছি। ক্ষতিগ্রস্তরা আমাদের কাছে আবেদন করলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

লংগদু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আকিব ওসমান বলেন, পাহাড়ে অবস্থান নেওয়া হাতিগুলোর বিষয়ে বনবিভাগ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। গত রাতের তাণ্ডবের ঘটনাও জানানো হয়েছে এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।