পাহাড়ে প্রথমবারের মতো চাষ হলো উচ্চমূল্যের ব্ল্যাক রাইস

পার্বত্যজেলা রাঙামাটির লংগদুতে চাষ করা হচ্ছে চীনের সপ্তদশ শতকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন উচ্চমূল্যের ব্ল্যাক রাইস। চীনে চতুর্দশ শতক থেকে সপ্তদশ শতকে কিং যুগে এ ব্ল্যাক রাইস জাতের ধান চাষ হতো। তবে এ ধান থেকে উৎপাদিত চালের ভাত রাজপরিবার ছাড়া অন্য কারো খাওয়ার অধিকার ছিল না। প্রজাদের জন্য এই চাল নিষিদ্ধ ছিল বলে এই চালকে বলা হতো নিষিদ্ধ চাল বা ফরবিডেন রাইস। পরবর্তী সময়ে জাপান ও মিয়ানমারে এই চালের চাষ শুরু হয়। সেখান থেকে এই চাল আসে বাংলাদেশে। পার্বত্য এলাকায় এই চালকে বলা হয় পোড়া বিন্নি চাল।

সম্প্রতি উপজেলার মাইনীমূখ ইউনিয়নের গাথাছড়া গ্রামে ৭ শতাংশ জমিতে ব্ল্যাক রাইসের শস্য চাষাবাদ হতে দেখা গেছে। স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. আনোয়ার হোসেন ও আমির হোসেন নিজ এলাকায় ব্ল্যাক রাইস চাষ করেছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের সহায়তা পেলে এ ধান চাষে সফল হওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তারা।

আনোয়ার ও আমির হোসেন জানান, ব্ল্যাক রাইসকে স্বাভাবিক ধানের মতই পরিচর্যা করতে হয়। অতিরিক্ত কোন পরিচর্যার প্রয়োজন না হলেও অন্য ধানের তুলনায় অধিক লাভবান হওয়া যাবে। পার্বত্যাঞ্চলের লংগদুতে আমরাই প্রথম ব্ল্যাক রাইস চাষ করি। যদি সরকারী ভাবে সুযোগ-সুবিধা পাই, তাহলে আগামীতে ব্যাপকভাবে চাষ করবো।

উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্লাভিনয়ের্ড বা এনথোসায়ানিন খুব বেশি পরিমাণে থাকায় এই চালের রং কালো হয়। এই উপাদানটির কারণে ক্যান্সার, হৃদরোগ, স্নায়ুরোগ এবং ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে প্রতিহত করতে সহায়তা করে। কালো চাল ক্যান্সার প্রতিরোধে অনন্য। এই চালে আয়রন বেশি, কিন্তু শর্করা কম। আর এই চালের ভাত অনেক বেশি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ব্ল্যাক রাইস উচ্চমূল্যের একটি ধানের জাত। এ ধান প্রান্তিক পর্যায়ে চাষ হলে কৃষক লাভবান হবে। আমাদের পক্ষ হতে ব্ল্যাক রাইস চাষিদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে যাবো।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।