পাহাড়ে রামবুটান চাষে সফলতা

পাহাড়ে প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলক বিদেশি ফল রামবুটান চাষ করে সফলতা পেয়েছেন রাঙামাটির লংগদুর স্থানীয় যুবক নাজমুল হোসেন। ইউটিউবের সহায়তায় নিজ বাড়িতে পরীক্ষামূলকভাবে ৩২টি রামবুটানের চারা রোপন করেন তিনি। ফলন ভালো হওয়ায় লাভের আশা করছেন তিনি।

জানা গেছে, মালয়েশিয়ান ভাষায় রামবুটান শব্দের অর্থ চুল। চামড়ার ওপর চুল বা দাড়িগুলোর জন্যই ফলটির এই নাম। এ ফলের আদি উৎস মালয়েশিয়া আর ইন্দোনেশিয়া। এরপর তা ছড়িয়ে গেছে ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, ব্রুনেই, শ্রীলঙ্কায় ছড়িয়ে যায়। এখন বাংলাদেশেও এর চাষ হচ্ছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তৃর্ণ ভূমিতে সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে আছে বিদেশি ফল রামবুটান গাছ। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সাধারণ মানুষ আগ্রহের সাথে পরিদর্শনে যাচ্ছে পাহাড়ের চাষাবাদে নতুন মাত্রায় যোগ হওয়া এ ফল দেখতে। ফলটির গায়ে নরম কাঁটাযুক্ত তবে কিছুটা লিচু আকৃতির এবং বেশ সুস্বাদু।

রামবুটান চাষী নাজমুল জানান, উপজেলার বগাচতর ইউনিয়নের মহাজন পাড়া এলাকায় তার নিজ বাড়িতে পরীক্ষামূলকভাবে ৩২টি বিদেশি ফল রামবুটানের চারা রোপন করেন তিনি। ইউটিউব দেখে চারা সংগ্রহ করতে তাকে নরসিংদী জেলার শিবপুর যেতে হয়েছিলো। সেখান থেকে প্রতিটি চারা ৩ হাজার টাকা ধরে ক্রয় করে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে ইউটিউব দেখেই চারা রোপন থেকে শুরু করে পরিচর্চা সবকিছু করেন।

নাজমুল জানান, এতে তার এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়েছে। ফলটির বাজারমূল্যও যথেষ্ট ভালো বলে জানিয়েছেন তিনি। বাণিজ্যিকভাবেও সফল হতে চান তরুণ এই কৃষক।

তিনি আরও জানান, ফলটি নতুন হওয়ায় এখনও মানুষের কাছে তেমন পরিচিত হয়নি। তবুও যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি রামবুটান এক হাজার টাকা দরে বাজারে বিক্রি করতে পারছি। স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগীতা পেলে বাণিজ্যিকভাবে সফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, এই বিদেশি ফল রামবুটান দেখতে প্রতিনিয়ত অনেক মানুষ ভিড় জমাচ্ছে তার বাড়িতে। যেহেতু পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ আগে কখনো এটি দেখেনি, সবাই নতুন ফল দেখার আগ্রহ প্রকাশ করছে। এছাড়াও তাদের ধারণা বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু করলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। নাজমুল এই চাষাবাদ দেখে অনেকেই রামবুটান চাষ করার পরিকল্পনা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীযরা।

লংগদু উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, পাহাড়ে এই প্রথম রামবুটান চাষে সাড়া ফেলেছেন তরুণ কৃষক নাজমুল। যেহেতু বিদেশি ফল চাষে পরীক্ষামূলকভাবে তিনি সফল হয়েছেন তাই এটাকে বাণিজ্যিকভাবে সফল করতে আমাদের পক্ষ হতে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।