চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়গুলো অবৈধভাবে দখল করে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি স্থাপনে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ততা পেয়েছে প্রশাসন। কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ মদদে সেখানে সড়ক নির্মাণ হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বসতি স্থাপনে ভোটের হিসাব প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।
আর এসব এলাকায় বসবাসে সরকারি পরিসেবা-বিদ্যুৎ, গ্যাস, ওয়াসার লাইন জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে স্থাপন হয়। বসতিগুলোতে স্যানিটেশন ব্যবস্থার পাশাপাশি শিক্ষা সহায়তা দেয় বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও)।
মঙ্গলবার (২১ জুন) চট্টগ্রাম পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৪তম সভায় বিভিন্ন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কথায় এসব বিষয় উঠে আসে।
বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মো. মাসুদ কামালের সঞ্চালনায় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাকির হোসেন খান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, সিএমপি’র ডিসি (পশ্চিম) আব্দুল ওয়ারিশ, পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক হিল্লোল বিশ্বাস, বিজিবি চট্টগ্রাম ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্ণেল আহমেদ জামিল, চট্টগ্রাম সেনা নিবাসের মেজর ফারুক মেহেদী, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী শাব্বির ইকবাল, সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদ, রেলওয়ের সিইও সুজন চৌধুরী প্রমূখ।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার যে সকল পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধ স্থাপনা রয়েছে ও চরম ঝুঁকির মধ্যে নিম্ন আয়ের লোকজন বসবাস করছে সেগুলো উচ্ছেদ করে লোকজনদেরকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হচ্ছে। একই সাথে অবৈধ স্থাপনাগুলোর বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, উচ্ছেদের পর ঐসব পাহাড়ে আর যাতে কেউ বসতি স্থাপন করতে না পারে সে ব্যাপারে প্রশাসন সতর্ক রয়েছে। যারা পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে তাদের পূনর্বাসনের ব্যাপারে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, একদিকে আমরা ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করি, আরেক দিকে তারা দখল করে। আমরা অতি বৃষ্টির কারণে যাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে এনেছি সেখান থেকে পালিয়ে পাহাড়ে রাত যাপন করতে গিয়েও মারা গেছেন।
তিনি আরও বলেন, এবার ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ স্থাপনা অপসারণ শেষে আমরা আরসিসি পিলার দিয়ে ঘেরাও করে দিবো। পুনরায় যাতে দখল না হয় সে বিষয়ে তদারকি করা হবে।
সভায় গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে ৫ জনের প্রাণহাণির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করা হয়।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।