পুলিশের বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় আহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শায়লা আকতারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান ও জড়িত পুলিশ সদস্যের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ৬ দফা দাবি জানান।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে তারা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন এবং পরে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটের সামনে অবস্থান নেন।
মানববন্ধন শেষে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ৬ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
দাবিগুলো হলো:
১. দুর্ঘটনায় জড়িত পুলিশের গাড়িতে থাকা এএস আই আশরাফুলসহ তার সাথে তার সহকারী পুলিশ যারা ছিল তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে বর্তমান আইন অনুযায়ী সর্ব্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা।
২. আজীবন চিকিৎসা সেবা বাবদ ১ কোটি টাকা ক্ষতি পূরণ।
৩. পুলিশের নজরদারিতে সড়ককে আরো নিরাপদ করা।
৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নাম্বার গেট থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত অটোরিকশার সরাসরি সেবা চালু করা।
৫. বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা শিক্ষার্থী সেল করা।
৬. সড়ক দূর্ঘটনা প্রতিরোধে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া।
এ সময় ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী হাসান মাহমুদ আসিফ বলেন, এ দুর্ঘটনার পর যদি তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হত তাহলে তার এত বড় ক্ষতি হত না। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে তারা এভাবে দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিকে ফেলে পালিয়ে না যায়।
রোখসানা আঁখি বলেন, এখানে প্রশাসনেরও দায়বদ্ধতা আছে। একটা শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে চিন্তা করে পরিবারের হাল ধরবে। হঠাৎ করেই তার জীবন থমকে গেল। এক্ষেত্রে তার ভবিষ্যতের কথা ভেবে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারী সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার সময় কুলগাঁও স্কুলের সামনে নগরীর বায়েজিদ থানা পুলিশের গাড়ি অপর একটি গাড়িকে ধাক্কা দিলে শায়লা আকতার গুরুতর আহত হয়।
এ সময় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধার না করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
এ ঘটনায় পুলিশ গাড়ি চালককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তে প্রাথমিকভাবে ওই পুলিশ সদস্যের ড্রাইভিংয়ে ত্রুটি পাওয়া গেছে। প্রথমে সেই পুলিশ সদস্য গাড়ির ব্রেক ফেল বলে চালিয়ে দিলেও তদন্তে উঠে আসে গাড়ি ফিট ছিল। দুর্ঘটনার পর সেই পুলিশ সদস্য গাড়ি একটি গ্যারেজে নিয়ে ব্রেক ফেল করার মতো একটি তার কাটিয়ে নেয়। তদন্তে বিষয়টি ধরা পড়ার পর তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।