পুলিশের ঘরে লুট করতে গিয়ে ধরা তিন যুবক, চক্রে আছে শালা-দুলাভাই

পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. জাকেরুল হক কর্মরত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে। পরিবার নিয়ে থাকেন নগরীর বাকলিয়া থানার চান্দাপুকুর এলাকায়। তিনি কর্মস্থলে থাকার সুযোগে তিন যুবক জোরপূর্বক তার বাসায় প্রবেশ করে স্বর্ণালঙ্কার লুটের চেষ্টা চালায়। এসময় কৌশলে তার স্ত্রী পুলিশের জাতীয় সেবা ৯৯৯এ ফোন করে সহযোগিতা চাইলে বাকলিয়া থানার টিম গিয়ে তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেন।

গ্রেপ্তার তিনজন হলো মো. ইফাজ সুলতান, তৌসিফ আহম্মেদ ও সার্জিল চৌধুরী আলভী। সিডিএমএস যাচাই করে জানা গেছে, মো. ইফাজ সুলতানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদকসহ পাঁচটি এবং তৌসিফের বিরুদ্ধে চারটি মামলা রয়েছে।

বুধবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় বিষয়টি চট্টগ্রাম খবরকে নিশ্চিত করেন বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহিম। তিনি বলেন, ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা তিনজনকেই আটক করি। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ মামলা করেছেন। আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এএসআই মো. জাকেরুল হকের স্ত্রী সাহিদা আক্তার রিটা বলেন, ইফাজসহ তিনজন আমার বাসায় ঢুকে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পরে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা পয়সা হাতিয়ে নিতে আলমারি আর ওয়ারড্রব ভাঙচুর করে। এ সময় আমি কৌশলে বাথরুমে ঢুকে ৯৯৯-এ ফোন করে পুলিশকে বিষয়টি জানাই। দ্রুত তাঁরা এসে আমি ও আমার দুই সন্তানকে উদ্ধার করেন এবং তিনজনকে আটক করে নিয়ে যান।

আসামি ইফাজ সুলতান ফেনী সদরের ফতেহপুরের খালেদ সোবহানের ছেলে। খালেদ সোবহানের পরিবার ফেনীসহ দেশের নামকরা একটি পরিবার। হেফাজতে ইসলামের সাবেক এক নায়েবে আমির খালেদ সোবহান থেকে ভাগিয়ে ইফাজের মা জলি সোহবহানকে বিয়ে করেন। ইফাজ ও তার মায়ের বিরুদ্ধে আগেও মাদক মামলা হয়েছিল। এসব মামলায় মা-ছেলে জেলও খেটেছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ভুক্তভোগী গৃহবধূ সাহিদা আক্তার রিটার বাপের বাড়ি এবং হামলাকারী ইফাজের নানার বাড়ি একই এলাকায়। এই সূত্রে ইফাজ ও তার মায়ের অতীতে মাদক মামলায় গ্রেপ্তারের বিষয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত বেশ কিছু সংবাদের কপি মানুষজনকে দেখিয়ে এসবের প্রতিবাদ জানান রিটার ছোট ভাই সাজ্জাদ হোছাইন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন ইফাজ। সেজন্য নিজের শ্যালক আলভি এবং তার অপরাধের অপর সঙ্গী তৌসিফকে নিয়ে সাজ্জাদের বোন রিটার বাসায় যান।

এ সময় রিটা দুই সন্তানকে নিয়ে বাসায় ছিলেন। তাঁর স্বামী আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে কর্মরত মো. জাকেরুল হক তাঁর কর্মস্থলে ছিলেন। ইফাজ দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে রিটাকে ধাক্কা দেন। পরে ছুরির ভয় দেখিয়ে স্বর্ণালঙ্কার, টাকা পয়সাসহ মালামাল হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন।

এর মধ্যেই কৌশলে রিটা বাথরুমে ঢুকে জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ ফোন করেন। পরে খবর পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসায় হাজির হন পুলিশের সদস্যরা। পরে তিনজনকে আটক করেন তারা। এ সময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মালামাল হাতিয়ে নেয়ার জন্য হামলা চালানোর কথা স্বীকার করেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।