পেকুয়ায় বাবুল চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

কক্সবাজার জেলার পেকুয়ার রাজাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুলের ওপর হামলা ও তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এসময় মামলা প্রত্যাহার না হলে দলীয়ভাবে বড় কর্মসূচির ঘোষনা দেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

২৮ মার্চ (সোমবার) সন্ধ্যায় রাজাখালী ইউনিয়নের সবুজ বাজারে এ বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্টিত হয়। সমাবেশ থেকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল আলিমকে দূর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে তার প্রত্যাহারের পাশাপাশি মামলা প্রত্যাহারেরও দাবী জানানো হয়।

এ সময় বক্তব্য দেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাজী আবু তাহের, সহসভাপতি হাজী সেকান্দর, সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেম আজাদ, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এতারাফ চৌধুরী, যুবলীগ রাজাখালীর সভাপতি রিয়াজ খান রাজু, উপজেলা যুবলীগ নেতা জহির উদ্দিন, আনিছুর রহমান বাবুল, ইউনিয়ন আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল আলম, উপজেলা মৎস্যজীবিলীগের সহসভাপতি মনছুর আলম, কৃষকলীগ সাধারন সম্পাদক মো. সালাহ উদ্দিন, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল বশর, হাজী আবু তাহের মনু, ফজলুল কাদের, মো. ইদ্রিস সওদাগর, আবু বক্কর, ওয়ার্ড কমিটির সাধারন সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, শামশুল ইসলাম, ছরওয়ার প্রমুখ। ছাত্রলীগ নেতা ইসমাইল জিহাদী, ইউপি সদস্য নেজাম উদ্দিন নেজু, আনোয়ার হোসাইন, হাজী গোলাম রহমান, ছমিউল্লাহ মেম্বার, রুহুল আমিন, নুরুল আলম, হোসাইন শহীদ সাইফুল্লাহ, বাদশাহ মেম্বার, মহিলা আ’লীগ নেত্রী ও ইউপির নারী সদস্য ছেনুয়ারা প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও মামলায় আমরা হতাশ হয়েছি। এ মামলা মূলত গায়েবী ঘটনায় হয়েছে। এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল আলিম একজন দুর্ণীতিবাজ ও ঘুষখোর কর্মকর্তা। ২৭ মার্চ দুপুরের দিকে চেয়ারম্যান পেকুয়ায় আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় যাচ্ছিলেন। রাজাখালী ও বারবাকিয়া পারাপার আরসিসি সেতু পুনঃসংষ্কারকাজ বাস্তবায়ন চলছিল। স্থানীয়দের উদ্যোগ ও অর্থসহায়তায় এ ব্রীজটির কাজ হচ্ছিল। সেখানে এলজিইডির ওই কর্মকর্তার সাথে চেয়ারম্যানের কথা হয়েছে। এক পর্যায়ে আবদুল আলীম নামক ওই কর্মকর্তা হঠাৎ চেয়ারম্যানকে ঘুসি মারে। এতে করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। চেয়ারম্যানকে মারধর করা হয়েছে। এ খবরে কয়েক হাজার মানুষ সেখানে জড়ো হন।

আওয়ামী লীগ নেতাদের দাবি, ওই সময় চেয়ারম্যান নিজেই এলজিইডির ওই কর্মকর্তাকে জনরোষ থেকে উদ্ধার করেন। পরবর্তীতে ওই কর্মকর্তা বাদী হয়ে পেকুয়া থানায় একটি এজাহার প্রেরণ করেন। ওই এজাহারটি পুলিশ নিয়মিত মামলা হিসেবে রেকর্ড করে। আমরা মামলার খবর পেয়ে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে কিল, ঘুসি মারা হয়েছে। চেয়ারম্যান হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। অথচ তার বিরুদ্ধে নেয়া হয়েছে গায়েবী মামলা। আমরা রাজাখালী বাসী মনে করছি এটি জনপ্রতিনিধির উপর চরম অবিচার। সরকারী কর্মচারী জনগনের কাছ থেকে বেতন নেন। জনপ্রতিনিধির উপর হাত ওঠানো এটি চরম দুঃসাহস। নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান হয়েছেন। তিনি রাজাখালীর অত্যন্ত জনপ্রিয় চেয়ারম্যান।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেম আজাদ বলেন, আমরা ওই ঘুষখোর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চাই। কিছুদিন আগে সড়ক উন্নয়ন কাজ হচ্ছিল নিন্মমানের। চেয়ারম্যান গিয়ে কাজ সঠিক ভাবে করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। লবণ পানি দিয়ে ঢালাইয়ের কাজ হচ্ছিল। সেখানে আবদুল আলীম নিজেই উপস্থিত ছিলেন। চেয়ারম্যান গিয়ে কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এর প্রতিশোধ নিতে ওই দিন জনপ্রিয় চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুলের শরীরে হাত তুলেছে ওই আবদুল আলীম।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, আমরা কর্মসূচীর দিকে যাচ্ছি। আজকে অনির্দিষ্টভাবে করেছি। হঠাৎ হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমেছে। জনগনের সংহতি ও অংশগ্রহণে প্রতীয়মান হচ্ছে নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুল এ রাজাখালীবাসীর মাটি ও মানুষের নেতা। একজন সৎ জনপ্রতিনিধির উপর কাল্পনিক মামলা আমরা কোন ধরনের সমর্থন করতে পারিনা। রাস্তায় নেমেছি এর প্রতিবাদ আরো অধিক তীব্রতর হবে। কর্মসূচী হবে রাজাখালীসহ পেকুয়া উপজেলায়।

এ ব্যাপারে পেকুয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া অভিযোগ এনে চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার বাবুলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল আলিম। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি।

প্রতিবাদ সমাবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওসি বলেন, আমাদের কাছে প্রতিবাদ সমাবেশের খবর আসার পর ঘটনাস্থলে আমরা ফোর্স পাঠিয়েছিলাম। ফোর্স যাওয়ার আগেই তারা স্থান ত্যাগ করেছে। আমরা গিয়ে কাউকে পাইনি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।