পোষ্য কোটা বাতিল না হলে আমরণ অনশনের ঘোষণা চবি শিক্ষার্থীদের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) পোষ্য কোটা বাতিল ও জুলাই আন্দোলনে হামলা ও সহিংসতাকারীদের বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে এ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় আগামীকাল বুধবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার মধ্যে প্রশাসন এ কোটা বাতিল না করলে আমরণ অনশেনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

এ সময় জুলাই অভ্যুত্থানে এক চোখ হারানো বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শুভ মাহমুদ বলেন, শহীদদের রক্তের উপর দাড়িয়ে গড়ে উঠা প্রশাসন আমাদেরকে চরমভাবে আশাহত করেছে। কেননা তারা স্বাধীন ক্যাম্পাসেও পোষ্য কোটার মতো অমূলক কোটা জারি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পোষ্য কোটাকে আমরা পশুদের কোটা বলে বিবেচনা করি।কোটার বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে আমি আমার একটি চোখ হারিয়েছি, প্রয়োজনে আরও একটি চোখ দেব তবুও চবিকে পোষ্য কোটা মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, এটা শুধু আমাদের নয়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য লজ্জাজনক। জুলাই পরবর্তী বাংলাদেশেও আমাদেরকে কোটার জন্য আন্দোলন করতে হচ্ছে। যে প্রশাসন শহীদ হৃদয় তরুয়া এবং শহীদ ফরহাদের রক্তের উপর বসে আছে তাদের কাছে খুনিদের বিচার চাইতে হচ্ছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই যদি প্রশাসন এখনো বিচারের নামে তালবাহানা করে, শান্তি কমিটির নামে কোন তালবাহানা করে, তাহলে শিক্ষার্থীরা খুনিদের বিচার নিশ্চিত করতে বাধ্য হবে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আমাদেরকে আলোচনায় ডাকার দরকার নাই, জুলাই অভ্যুত্থানেও আমাদের সিদ্ধান্ত রাজপথে হয়েছে এবারও আমাদের সিদ্ধান্ত রাজপথেই জানিয়ে দিচ্ছি, পোষ্য কোটা নামক প্রহসনমূলক কোটা আগামীকাল বারোটার মধ্যে বাতিল করতে হবে। যদি তা না করা হয় আমরা আগামীকাল থেকে আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী তানিম মুশফিক বলেন, আমরা যোগ্যতার পক্ষে এবং কোটার বিপক্ষে। কারণ, কোটা কখনো যোগ্যতা হতে পারে না। আমরা সব সময় নতুনত্বে বিশ্বাসী, আমরা পরিবর্তন চাই। আমরা ৪৭, ৭১, ৭৫, ৯০ এবং সর্বশেষ ২৪-এ স্বাধীন হয়েছি কিন্তু আমরা কোনো কিছুর পরিবর্তন করতে পারি নাই।আমরা এখনো আগের কালচার ধরে রেখেছি, আমরা এখনো অন্যায়-অবিচার ধরে রেখেছি, জুলুমের বিরুদ্ধে দাড়াতে পারি নাই, ইনসাফের পক্ষে দাড়াতে পারি নাই।আজকে আমরা ইনসাফের পক্ষে দাড়িয়েছি, তাই প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি পোষ্য কোটা বাতিল করবেন।

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আরিয়ান বলেন, ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে পোষ্য কোটা নিয়ে আন্দোলন করা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, কর্মকতা-কর্মচারীরা বেঁচে থাকতে তো নানা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেই আবার মৃত্যুর পরও কেন্দ্রীয় কবরস্থানেও সুযোগ পায়। সেখানে তাদের সন্তানদের কোটা দেওয়া কতটা যৌক্তিক প্রশাসনের কাছে সেটা আমার প্রশ্ন! স্বাধীন বাংলাদেশে কোটার সাথে আপস করা মানে শহীদদের সাথে বেঈমানি করা। তাই প্রশাসনের কাছে দাবি তাঁরা যেনো কোটাবিহীন সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়তা করেন।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।