চট্টগ্রাম খবরে প্রকাশিত ‘ইস্টার্ন রিফাইনারির এমডির বহিষ্কার চায় বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তারা’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড (ইআরএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ লোকমান।
প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, ‘ইআরএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে অতি অল্প সময়ে মোঃ লোকমান কোম্পানির উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি অর্জনে অসামান্য অবদান রেখেছেন। যেমন- প্রায় ৫৬ বছরের পুরোনো স্থাপনা ইআরএল যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও সঠিক পরিচালনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বার্ষিক পরিশোধন সক্ষমতার (১৫ লক্ষ মে:টন) শতভাগের অধিক (১৫,৪৫,২৪০ মে: টন) অর্জন, প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মুনাফা (৮.৬৪.৫৭ কোটি) অর্জন, সৃষ্টিশীল/উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এলপিজি’র উৎপাদন পূর্বের তুলনায় ৪০% বৃদ্ধি, সর্বোচ্চ দক্ষতার সাথে APA বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিপিসি’র অধীনস্থ কোম্পনিসমূহের মধ্যে ১ম স্থান অধিকার করা, ইআরএল’র দ্বি-বার্ষিক শাট-ডাউন সাফল্যজনকভাবে সমাপ্তকরণ, কর্মকর্তা- কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি, সুস্থ শিল্প সম্পর্ক ও শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণ, ৫২তম জাতীয় সমবায় দিবসে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বর্ণপদক প্রাপ্তি, প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে সরকারি কোষাগারে সর্বোচ্চ (৮.৩০.৭৭ কোটি) জমাকরণ-ইত্যাদির মাধ্যমে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় অভূতপূর্ব অবদান রেখে ইআরএল জাতীয় পর্যায়ে লাভ করেছে অনন্য সম্মাননা ও স্বীকৃতি।’
এতে বলা হয়, ‘মোঃ লোকমানের তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে কাজ করার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। ইআরএল-এ তাঁর মত একজন দক্ষ, অভিজ্ঞ, চৌকস ও মেধাবী প্রকৌশলীর প্রয়োজন রয়েছে বিধায় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন, উৎপাদন, অগ্রগতি এবং কোম্পানিকে অব্যাহত লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমুন্নত রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ কর্তৃপক্ষ প্রকৌশলী মোঃ লোকমানকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করে। তাঁকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করায় প্রতিষ্ঠানের জুনিয়র কোনো প্রকৌশলী বঞ্চিত হননি বরং সংস্থা কর্তৃক তাঁদেরকে বিপিসি ও এর অঙ্গপ্রতিষ্ঠানে সমপদে নিয়োজিত করা হয়েছে।’
প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, ‘ইআরএল-এর চলমান প্রকল্প সমূহ সরকার তথা বিপিসি’র অর্থায়নে এবং সম্পূর্ণভাবে মন্ত্রণালয় ও বিপিসি’র ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হয়। প্রকল্পের পরিচালকগণও বিপিসি/মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। এতে ইআরএল-এর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সুতরাং, প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগ বা প্রকল্পের কোনো সিদ্ধান্তে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। অর্থাৎ, ইআরএল-এর বিভিন্ন চলমান প্রকল্পের কাজের সাথে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অমূলক, উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন।’
এতে বলা হয়, ‘ইআরএল-এর নিয়োগ ও পদোন্নতি কার্যক্রম বিপিসি কর্তৃক প্রণীত নিয়োগ ও পদোন্নতি নীতিমালা মোতাবেক পরিচালিত হয়। নিয়োগ ও পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থাপনা পরিচালকের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই। ইআরএল-এ নির্বাচিত অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশন এবং সিবিএ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানে সবাই সমান সুবিধা ভোগ করে, এখানে দলীয় বিবেচনা, স্বেচ্ছাচারিতা বা বৈষম্যের কোনো অভিযোগ নেই। প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতা স্বার্থে এবং বিভিন্ন বিভাগের চাহিদা মোতাবেক কেবলমাত্র অভ্যন্তরীণ পদায়ন/বদলি করা হয়ে থাকে। সুতরাং বদলির মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের বিষয়টি ভিত্তিহীন।’
প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়, ‘ইআরএল-এর বর্তমানে ১৪টি মামলা চলমান রয়েছে। উক্ত মামলা সমূহ পরিচালনার জন্য প্রয়োজন অনুসারে একাধিক আইন বিশেষজ্ঞ নিয়োজিত আছেন। সুষ্ঠুভাবে মামলা সমূহ পরিচালনার জন্য নিয়োজিত আইন বিশেষজ্ঞদেরকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণপূর্বক বিল প্রদান করা হয়। এতে আর্থিক অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া ক্যান্টিন ও মেডিকেলসহ সকল খাতের বিভিন্ন কার্যক্রম এবং দরপত্র আহ্বান, ঠিকাদার নিয়োগ ইত্যাদি নির্ধারিত কমিটির মাধ্যমে যথাযথ ক্রয় প্রক্রিয়া অনুসরণপূর্বক সম্পাদন করা হয় বিধায় এ খাতে কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই।’
এতে বলা হয়, ‘প্রতিবছর অর্থ বিভাগের মনিটরিং সেল কর্তৃক কোম্পানির বাজেট অনুমোদিত হয়। নির্ধারিত বাজেট মোতাবেক প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সংস্কার/উন্নয়ন এর কাজ সম্পাদন করা হয়। ইআরএল প্রায় ৫৬ বছরের পুরাতন একটি প্রতিষ্ঠান। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং পুরাতন ভবন সমূহ সংস্কার ইআরএল-এর একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সুতরাং, কন্ট্রাকশন খাতে অতিরিক্ত আর্থিক ব্যয়ের বিষয়টি সঠিক নয়। এছাড়াও, কন্সট্রাকশন কাজে ঠিকাদার নিয়োগ সরকারি পিপিআর ২০০৮ মোতাবেক সম্পাদন করা হয়। সে ক্ষেত্রে পছন্দের ঠিকাদার নিয়োগের কোনো অবকাশ নেই। এছাড়া কুলিং টাওয়ার ভেঙ্গে পড়ায় প্ল্যান্ট দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার এবং উৎপাদন বন্ধের অভিযোগটিও সঠিক নয়।’
প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, ‘ইআরএল-এ শুধু বিটুমিন উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। বিটুমিন বিক্রয় এবং বিপণন কার্যক্রম পুরোপুরি বিপিসি’র নিয়ন্ত্রণে এর অধীনস্থ বিপণন কোম্পানি সমূহের মাধ্যমে সম্পাদন করা হয় ফলে বিটুমিনের বিক্রয় এবং বিপণনে ইআরএল এর প্রত্যক্ষ কোনো ভূমিকা নেই। ইআরএল-এ কোনো তেল চুরির সিন্ডিকেট নেই। জ্বালানি তেল বিক্রি বা বাজারজাত করার সুযোগ ইআরএল-এ না থাকায় তেল চুরির অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
প্রতিবেদকের বক্তব্য
বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগের ভিত্তিতে রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে। এতে দৈনিক চট্টগ্রাম খবরের নিজস্ব কোন বক্তব্য নেই। উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাউকে হেয় করা চট্টগ্রাম খবরের উদ্দেশ্য নয়।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।