চট্টগ্রামের আনোয়ারার চাতরীতে বসতঘরে টিন লাগানো নিয়ে ঝামেলায় প্রতিপক্ষের এলাপাতাড়ি দায়ের কোপে মোহাম্মদ হোসেন (৬৫) নামের এক ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। এঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন নিহতের মেয়ে সাজেয়া বেগম (৪০) ও নাতী মোহাম্মদ রায়হান (১৬)। রায়হান এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বৃদ্ধ হোসেন।
নিহত মোহাম্মদ হোসেন চাতরির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়ার মৃত আবিদ আলীর পুত্র। তার সংসারে স্ত্রী ও দুই মেয়ে রয়েছে।
নিহতের মেয়ে রুবি আকতার (৩৫) বলেন, ‘বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে কর্ণফুলী এলাকার শশুর বাড়ি থেকে এসেছি। প্রতিবেশি গিয়াস উদ্দিন একজন মাদককারবারি। তাদের অত্যাচারে বাড়ির মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। দিনদুপুরে তারা আমার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ হত্যাকান্ডের বিচার চাই এবং জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ জানাচ্ছি।’
নিহতের মেয়ে আহত সাজেয়া বেগম (৪০) বলেন, ‘শশুরের ঘরে থাকা মোহাম্মদ ওসমানের স্ত্রী রোকসানা আকতার ও তার মেয়ের জামাই মো. মোরশেদ (৩০)সহ পরিবারের সদস্যরা মিলে আমার বাবাকে ঘর থেকে টেনে হিচড়ে উঠানে বেদম মারধর করে। এসময় গিয়াস উদ্দিন ঘর থেকে ধারালো রাম দা বের বাবার মাথায় এলাপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। আমি বাবাকে রক্ষা করতে গিয়ে আমার মাথায়ও দায়ের কোপ পড়ে আর গুরুতরভাবে আহত হন আমার ছেলে মোহাম্মদ রায়হান (১৬)।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত তিনটার দিকে মারা যায়। গুরুতর আহত রায়হান এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আমাদের বসতঘরে টিন লাগানোর কারণে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। আমরা এই শাস্তি চাই।’
প্রতিবেশী ফারজানা আকতার (১৮) বলেন, ‘সকালে মিস্ত্রীরা যখন কাজ করছিলো তখনই একটু করে ঝগড়া হয়। এর জেরে ধরে বিকেলে সবাই একজোট হয়ে এসে এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ঘটনার পর থেকে পরিবারের সবাই পালিয়ে গেছে।’
অভিযুক্ত গিয়াস উদ্দিনের বাড়ি নোয়াখালী জেলার হাতিয়া এলাকায় হলেও সে পরিবারে দীর্ঘদিন ধরে নানার বাড়ি চাতরীতে থাকেন। এঘটনায় রোববার দুপুরে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল আহমেদ বলেন, ‘এঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।