‘আপনাকে সরাসরি দেইখ্যা কথা বলার মতো ভাগ্য আমরা নাই। আমার চারটা মাইয়া নিয়ে ভাড়া ঘরে থাকতাম। এখন আপনার দেওয়া ঘর পেয়ে আমাদের সুখের শেষ নেই। মনে হয় আমি ফাইভ স্টার হোটেলে আছি। কি সুন্দর পরিবেশে ঘর। আপনাকে প্রতিদিন দেখার জন্য মেয়ের টিউশনের জমানো টাকা দিয়ে একটি টেলিভিশন কিনেছি। আপনার জন্য দুইটি নকশী কাঁথা সেলাই করেছি। আমার এই উপহার আপনাকে অবশ্যই নিতে হবে।’
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে ঘর বিতরণ অনুষ্ঠানের লাইভে সংযুক্ত হয়ে আনোয়ারার রহিমা খাতুন এমনই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেসে নকশী কাঁথা গ্রহণের সম্মতি প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও আনোয়ারা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমানের সাথে সরাসরি কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় আনোয়ারায় উপকারভোগী রহিমা খাতুন ছাড়াও ইয়ার মোহাম্মদ প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি কথা বলে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রহিমা খাতুন আরও বলেন, ‘এখন আর অন্যের ঘরে ভাড়া নিয়ে থাকতে হবে না। আপনার দেওয়া ঘরে আমরা একটি পরিবার ও সমাজের মত করে থাকছি। আর ঘরের মধ্যে আমার মেয়ে শিশুদের পড়ালেখা করায় এবং আমি নকশী কাঁথা সেলাই করে মা মেয়ে প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা আয় করছি।’
শুধু রহিমায় নয়, এখানে ভূমিহীন ও গৃহহীন হতদরিদ্র আরও অনেকের নির্মিত তাদের নিজ ঘরে থাকতে পারছে। শুধু ঘরই নয়, থাকছে নিজ নামে দুই শতক জমি, স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট, সুন্দর বারান্দাসহ বসবাসের নিরাপদ সুবিধা। তাদের মত ১৩০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলো পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া স্বপ্নের বাড়ি।
ঈদের আগে নতুন ঘর পাওয়া এসব ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষগুলোর চোখে মুখে এখন অনাবিল স্বপ্ন। বাড়ি পাওয়ার আনন্দে তাদের চোখে আনন্দ অশ্রু।
প্রোগ্রাম শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপকারভোগী রহিমা খাতুনের দেওয়া নকশী কাঁথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য আমরা পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। ঈদের আগেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর নকশী কাঁথা পৌঁছানো হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম এমপি, বাঁশখালীর সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এমপি, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিন, ডিআইজি চট্টগ্রাম রেঞ্জ মো. আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নাজমুল আহসান, আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর হাসান চৌধুরী।
অন্যান্যদের মাঝে দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক শাহজাদা মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপক এম.এ মান্নান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এম.এ মালেক, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম, চেয়ারম্যানদের মাঝে নোয়াব আলী, আফতাব উদ্দিন চৌধুরী সোহেল, আমিন শরীফ, হাসনাইন জলিল চৌধুরী শাকিল, অসীম কুমার দেব, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল ইসলাম চৌধুরী, কলিম উদ্দিন, মাস্টার মোহাম্মদ ইদ্রিছ।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।