প্রবাসের পথে নিমিষেই ঝরলো ৫ তাজা প্রাণ, গ্রামের বাড়িতে হাহাকার-আর্তনাদ!

0

মার্চ মাসে দেশে ফেরার কথা ছিলো ইসমাইল হোসেনের। দেশের বাড়িতে চলছিলো তাকে বিয়ে করাবার প্রস্তুতিও। ছেলে দেশে ফিরলে মহা ধুমধাম করে ছেলেকে বিয়ে করিয়ে ফুটফুটে বউ ঘরে তোলার আশা নিয়ে ছেলে বাড়ি ফেরার দিন গুণছিলেন বাবা শরীয়ত উল্লাহ। কিন্তু বাবার স্বপ্নকে নিমিষেই ভেঙে চুরমার করে দেয় একটি দুর্ঘটনা। দক্ষিণ আফ্রিকায় সড়ক কেড়ে নিলো ইসমাইল হোসেনের তরতাজা প্রাণ। এখন ইসমাইলের বাড়িতে চলছে বুকফাটা আর্তনাদে শোকের মাতম।

শুধু ইসমাইল নয়, দক্ষিণ আফ্রিকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫ জনের বাড়িই ফেনী জেলায়। একসাথে ৫ প্রাণের ঝরে যাওয়াতে ফেনীজুড়েই নেমেছে শোকের ছায়। ৫ প্রবাসী মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম। একসাথে ছেলে ও ১০ বছরের আদরের নাতি হারিয়ে বিলাপ করে কাঁদছেন নিহত আবুল হোসেনের বাবা জামাল উদ্দিন। তার কান্নায় যেন ভারি হয়ে উঠেছে ফেনীর আকাশ বাতাস। আবুল হোসেন ও তার ছেলে নাদিম দক্ষিণ আফ্রিকায় বিমান বন্দর থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হয়। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।

ভিন্ন নয় নিহত রাজু আহমেদের পরিবাররে চিত্রও। সন্তান হারিয়ে ভেঙে পড়েছে পরিবারের সবাই। কান্নাজড়ানো স্বরে রাজু আহমেদের বাবা মো: মিলন বলেন, আমাদের সব আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক ছিলো রাজু। আমার রাজু নেই আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা। আমার রাজু মারা যায়নি। আমার বিশ্বাস সে ফিরে আসবে। ফোন করে বলবে, বাবা আমি ভালো আছি।

শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ফেনী পুলিশ সুপার মো. জাকির হাসান জানান, শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে দেশটির জোহানেসবার্গ থেকে কেপটাউনে যাওয়ার পথে বাফেলো এলাকায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ৫ জনের বাড়িই ফেনী জেলায়। নিহতদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে পুলিশ।
জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান বলেন, নিহতদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

নিহতরা হলেন- ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের বিরলী গ্রামের শরিয়ত উল্লাহর ছেলে ইসমাইল হোসেন (৩২), দাগনভূঞা উপজেলার দক্ষিণ নেয়াজপুর গ্রামের রাজু আহমেদ (৩৪), একই উপজেলার মাতুভূঁঞা ইউনিয়নের মমারিজপুরের মো. মোস্তফা (৪০), সোনাগাজী উপজেলার চর মজলিশপুরের আবুল হোসেন (৪৫) ও তার ছেলে নাদিম হোসেন (১০)।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। তারা হলেন, দাগনভূঁইয়া উপজেলার আনিসুল হক ও ঢাকা জেলার নাহিদ। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।

ksrm