প্রসূতির করোনা—হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলো মধ্যরাতে, এগিয়ে এলেন চিকিৎসক

সন্তান প্রসবের পর পরই অসুস্থ হয়ে পড়লে মুমূর্ষু স্ত্রীকে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান ইমতিয়াজ উদ্দিন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা গেল তিনি কোভিড আক্রান্ত। তখনই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করার কথা বলে ছাড়পত্র দিয়ে দেয়। এত রাতে অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে বিপাকে পড়ে যান ইমতিয়াজ। শেষে অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদকে কান্নাকাটি করে ফোন দিলে তাঁর চেষ্টায় রাতেই চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয় ইমতিয়াজের স্ত্রীকে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চিকিৎসা অনুষদের সাবেক ডিন ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক নাসির উদ্দিন মাহমুদের ফেসবুক পোস্টে তথ্যটি জানা যায়। গত রোববার দুপুরে দেওয়া পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

তিনি তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘কোভিড এখনো সম্পূর্ণ নির্মূল হয়নি, তাই আইসিইউসম্বলিত প্রত্যকটি হাসপাতালে বাধ্যতামূলকভাবে সীমিত আকারের হলেও কোভিড আইসিইউর ব্যবস্থা রাখতে বাধ্য করুন। মনে রাখবেন, মানুষের সকল আকুতি আপনাদের কাছে পৌঁছায় না।

নাসির উদ্দিন মাহমুদ আরও লেখেন, কোভিডকালীন দূঃসময়ের কথা মনে পড়ে গেল। আবার সেই অব্যবস্থা?

মো. ইমতিয়াজ উদ্দিন চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা গাউছিয়া কমিটির স্বেচ্ছাসেবক ও মানবিক দলের সমন্বয়ক। তাঁর নেতৃত্বে করোনাকাল থেকে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ধর্মবর্ণের ৯০০ শতাধিক মানুষকে দাফন—সৎকার সেবা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দুই হাজারের বেশী মানুষকে এম্বুলেন্স ও অক্সিজেন সেবা দেওয়া হয়। এখনও সে সেবা চলমান আছে।

জানতে চাইলে মো. ইমতিয়াজ উদ্দিন বলেন, কোভিড শনাক্ত হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রাতেই আমার স্ত্রীকে ছেড়ে দেয়। আমি চোখেমুখে পথ না দেখে নাসির মাহমুদ স্যারকে কল দিলে তিনি আমার বিপদে এগিয়ে আসেন। আমার স্ত্রী এখন মোটামুটি সুস্থ। সে এখনো হাসপাতালে ভর্তি আছে।

তিনি আরও বলেন, ‘রাতবিরাতে বিপদগ্রস্থ মানুষ নিয়ে ছুটেচলা আমাকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে তা কখনো ভাবিনি।’

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।