বাংলাদেশ ছাড়ল রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর পরিবার

বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর পরিবারের ১১ সদস্য কানাডার উদ্দেশে বাংলাদেশ ছেড়েছেন। শুক্রবার (১ এপ্রিল) মুহিবুল্লাহর পারিবারিক বন্ধু মানবাধিকারকর্মী নূর খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

এরআগে বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাত পৌনে ১২টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তারা কানাডার উদ্দেশে রওনা হন।

নূর খান বলেন, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহযোগিতায় মুহিবুল্লাহর পরিবারের সদস্যদের স্থানান্তর করা হয়েছে। ওই ১১ জনের মধ্যে মহিবুল্লাহর স্ত্রী নাসিমা খাতুন, নয় ছেলেমেয়ে এবং এক মেয়ের জামাই রয়েছেন। তাদেরকে রিফিউজি মর্যাদা দিয়ে কানাডার গভার্নমেন্ট অ্যাসিসটেন্স প্রোগ্রামের আওতায় নেওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে মুহিবুল্লাহ (৪৮) নিহত হন। এ ঘটনার জন্য তার পরিবার শুরু থেকে মিয়ানমারের সশস্ত্র সংগঠন আরসাকে (আরাকান স্যালভেশন আর্মি) দায়ী করে আসছে।

পরিবারের দাবি, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পক্ষে সক্রিয় থাকায় এবং শিবিরে জনপ্রিয় হয়ে উঠার কারণে মুহিবুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে। এরপর থেকে মুহিবুল্লাহর পরিবার নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে আসছিল। এ জন্য বিদেশে আশ্রয় চেয়ে তারা দুটি আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে আবেদন করেছিলেন।

বেশ কয়েকবছর আগে জীবন বাঁচাতে নিজ দেশ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে সপরিবারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা হন মুহিবুল্লাহ। সেখানেই গড়ে তোলেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ)।

রোহিঙ্গাদের কাছে মুহিবুল্লাহ ছিলেন বাড়ি ফেরার স্বপ্নে বিভোর এক মানুষ। গত কয়েক বছর ধরে নির্যাতনের মুখে মিয়ানমারে সবকিছু ফেলে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লাখো মানুষের মাঝে সেই স্বপ্ন তিনি বিলিয়ে আসছিলেন।

মুহিবুল্লাহর স্বজন ও অনুসারীদের দাবি ছিল, দেশে ফেরার এই স্বপ্নই তার কাল হয়েছে। রোহিঙ্গাদের মধ্যেই একটা অংশ দেশে ফিরতে চায় না। সশস্ত্র দলটির সঙ্গে ‘মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীর যোগাযোগ’ রয়েছে বলেও ক্যাম্পের অনেকের বিশ্বাস।

এমএফ

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।