বাঘাইহাট বাজার বয়কট প্রত্যাহারে সেনাবাহিনীর উদ্যোগ

বাঘাইহাট সেনা জোনের উদ্যোগে পাহাড়ি জনপদের অন্যতম বাঘাইহাট বাজার বয়কট প্রত্যাহার করছে স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠী। বাঘাইহাট সেনা জোনের মধ্যস্থতায় জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মো. মাসুদ রানার উদ্দ্যোগে চলমান বাঘাইহাট বাজার বর্জন প্রত্যাহার করেছে গঙ্গারাম ও মাচালং বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় পাহাড়িরা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ৩৫ নম্বর বঙ্গলতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞানোজ্বতি চাকমা, ৩৬ নম্বর সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা ও ইউপি সদস্যগণ এবং বাঘাইহাট বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার হোসেন, কাঠ মালিক সমিতির সভাপতি আনোয়ার হোসেন সহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

আগামী ২২ জুন রবিবার থেকে বাঘাইহাট বাজারে সাপ্তাহিক হাটে স্থানীয় পাহাড়ীরা আসবে ও বাজারের বেচাকেনা স্বাভাবিক থাকবে বলে সোমবার সকালে বাঘাইহাট জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাসুদ রানা এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

বাঘাইহাট জোন কমান্ডার বলেন, বাঘাইহাট জীপ মালিক সমিতির সাথে দ্বন্দ্বের জেরে বিগত প্রায় একমাস যাবত বাঘাইহাট বাজার বর্জন করেছিলেন স্থানীয় পাহাড়ি এলাকাবাসী। স্থানীয় প্রশাসন ও পাহাড়ি-বাঙালি গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ কয়েক দফা বসেও সমস্যার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় সাধারণ পাহাড়ি-বাঙালি জনগণের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বাঘাইহাট সেনা জোনের উদ্যোগে, স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকার পাহাড়ি বাঙালি গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে চলমান সমস্যার একটি স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব হয়েছে। সারা বাংলাদেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। পাহাড়েও তার ব্যতিক্রম নয়।

বাঘাইহাট বাজার সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, আমি বাঘাইহাট বাজারে দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে নেতৃত্ব দিয়ে আসছি। বিগত দিনে অনেক বাঁধা পার করে বাঘাইহাট বাজার আজকের এই অবস্থানে। পূর্বে বাঘাইহাট বাজার প্রায় দশ বছর বন্ধ ছিলো, প্রথমদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে কয়েক দফা চেষ্টায় ব্যর্থতার ফলে তা সমাধান হতে দশ বছর কেটে যায়। আমি মনে করি বাঘাইহাট জোন কমান্ডার আজকের এই উদ্যোগ না নিলে, পূর্বের ঘটনার পুনারাবৃত্তি ঘটতে পারতো।

এদিকে সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা বলেন, বাঘাইহাট জোনে অনেক জোন কমান্ডারকে দায়িত্ব পালন করতে দেখেছি, তবে বর্তমান জোন কমান্ডারের মত লোক খুব কমই পেয়েছি। বাঘাইহাট বাজার বর্জনের সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা স্থানীয়রা কয়েকবার বসেও সমাধান করতে পারিনি। কিন্তু তিনি কোনোরকম চাপ প্রয়োগ না করে হাসিমুখে সকলের সাথে কথা বলে সমাধান করে দিলেন। এরকম কর্মকর্তার হাত ধরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অনেক দূর এগিয়ে যাবে এই প্রত্যাশা করি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।