বান্দরবানে জঙ্গির কবর খুঁড়ে মেলেনি লাশ

সম্প্রতি র‌্যাবের হাতে আটক হওয়া ৫ জঙ্গির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আদালতের নির্দেশে বান্দরবানে থানচি ও রুমা উপজেলার গহীন পাহাড়ে এক জঙ্গি সদস্যের কবর থেকে মরদেহের সন্ধানে অভিযান পরিচালনা করেছে র‌্যাব, সেনাবাহিনী ও পুলিশ। তবে সেখানে কোনো মরদেহ খুঁজে পায়নি অভিযানকারী দলটি। পরে আশেপাশের এলাকাসহ দুর্গম পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে লাশের সন্ধানে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হেলিকপ্টারে করে ও পাহাড়ে পায়ে হেটে রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় এ যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

ঘটনাস্থল থেকে ফিরে সোমবার (১৬ জানুয়ারি) রুমা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন শিবলী বলেন, আদালতের স্পষ্ট আদেশ ছিল মরদেহ উঠাতে হবে। গ্রেপ্তারকৃত জঙ্গিরা কবরস্থান দেখিয়ে দেবে, তারা দেখিয়ে দিয়েছে। কবর খোড়া হয়েছে কিন্তু মরদেহ পাওয়া যায়নি। সেখানে সামান্য কিছু আলামত ছিল, এগুলো নিয়ে আসা হয়েছে।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ জানুয়ারি (বুধবার) থানচি ও রোয়াংছড়ি থেকে র‌্যাবের অভিযানে আটক ৫ জঙ্গি তথ্য দিয়েছে, থানচির মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রেমাক্রী প্রাংশা ইউনিয়নে একটি পাহাড়ি ঝিরির কাছে কুমিল্লার নুরুল ইসলামের ছেলে আল আমিন নামের এক জঙ্গিকে কবর দেওয়া হয়েছে। গত ২৫ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে ওই জঙ্গি কেএনএফ-এর জর্ডান ক্যাম্পে মারা গেলে তাকে পাহাড়ি ঝিরির পাশে কবর দেওয়া হয়, সে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কিয়ার সদস্য।

বান্দরবানে জঙ্গির কবর খুঁড়ে মেলেনি লাশ 1

রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, সম্প্রতি বান্দরবানের রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার গহীন পাহাড়ে র‌্যাবের অভিযান পরিচালনাকালে পাঁচ জঙ্গি গ্রেফতার হয়। তাদের দেওয়া তথ্য মতে জানা যায় কিছুদিন আগে ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র এক সদস্য আল আমিন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে মারা যান। তাদের বাকি সদস্যরা মিলে তাকে সেখানে কবর দিয়েছেন। পরে আদালত নিহত আল আমিনের কবর শনাক্ত করে তার মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দেন।

অভিযানে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গোয়েন্দা তথ্যর ভিত্তিতে জানা গেছে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র সদস্যরা পাহাড়ে অবস্থান করে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে তারা সহিংসতা বা হামলা চালাতে পারে এমন সংবাদে বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আমাদের এ অভিযান চলমান থাকবে এবং আমরা জঙ্গিদের নিমূলে কাজ করে যাবো।

প্রসঙ্গত, পার্বত্য জেলা বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ে সশস্ত্র দল কুকি ন্যাশনাল ফন্ট ‘কেএনএফ’ এর আস্তানায় নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র বেশ কিছু সদস্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। এ তথ্য পেয়ে গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে বান্দরবানের বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করছে যৌথ বাহিনী। সর্বশেষ ১১ জানুয়ারি ৫ জঙ্গিকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র‌্যাব।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।