স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের জামিন আবেদনের ওপর দীর্ঘ শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। দীর্ঘ একঘন্টা ২০ মিনিট ১৮ পৃষ্ঠার জামিনের আবেদন উভয় পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনানি শেষে আগামী ১৮ আগস্ট জামিনের বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেছেন বিচারক।
বুধবার (১৪ আগস্ট) চট্টগ্রাম তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জসিম উদ্দিন দীর্ঘ শুনানি করেন।
বাবুল আক্তারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা বাবুল আকতারের জামিন আবেদন করেছি। মাননীয় আদালত দীর্ঘ ১ ঘন্টা ২০ মিনিট শুনানি করেন। আগামী রোববার জামিন বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেছেন।’
২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে বের হওয়ার পর চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে। ঘটনার পর তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, তার জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তবে বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন ও শাশুড়ি সাহেদা মোশাররফ এই হত্যার জন্য বাবুলকে দায়ী করে আসছিলেন।
শুরু থেকে চট্টগ্রাম পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) মামলাটির তদন্ত করে। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালত মামলাটির তদন্তের ভার পিবিআইকে দেয়। সেটির তদন্ত শেষ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পিবিআই। কিন্তু আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। তবে বাবুল পিবিআই থেকে মামলার তদন্তভার সরিয়ে অন্য সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে দেন। ইতোমধ্যে পিবিআইতেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়েছে তিন বার।
দীর্ঘ তদন্তের পর হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার দাবি করে ২০২১ সালের ১১ মে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুলকে হেফাজতে নেয় পিবিআই। পরদিন ১২ মে দুপুরে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার শ্বশুর অর্থাৎ নিহত মিতুর বাবা। তখন থেকে বাবুল আক্তার কারাগারে আছেন।
কিন্তু শুরু থেকে বাবুল আক্তার ও তার পরিবার বাবুলের বিরুদ্ধে সদ্য বিদায়ী পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমারের ষড়যন্ত্র বলে দাবী করে আসছে। বনজ কুমার বিভিন্ন মামলায় বাবুলের মতো তার পিতা এবং ভাইকেও মামলায় জড়িয়েছে। যদিও সেসব মামলা আদালত তাদের দ্রুততার সঙ্গে জামিন দিয়েছে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।