কেন্দ্রীয় বায়তুশ শরফ চট্টগ্রামের আয়োজনে বায়তুশ শরফের ত্রি-রত্নের ইছালে-সওয়াব মাহফিল, আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন এবং আনজুমনে নওজোয়ান বাংলাদেশের নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির অভিষেক ও শাখা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৫ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে নানা আয়োজনে অনুষ্ঠানগুলো রাত ১১টা নৈশভোজের মাধ্যমে শেষ হয়।
সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বায়তুশ শরফের ত্রি—রত্ন হযরত কেবলা মীর মুহাম্মাদ আকতার (রাহ), হুজুর কেবলা শাহ সুফি মাওলানা আব্দুল জাব্বার (রাহ) এবং পীর সাহেব কেবলা বাহরুল উলুম শাহ সুফি কতুব উদ্দীনের (রাহ) ইছালে সওয়াব মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানমালার মূল আকর্ষণ ছিলেন রাহবারে বায়তুশ শরফ শায়খ আল্লামা মুহাম্মদ আব্দুল হাই নদভী।
যোহরের নামাজের পর থেকে আছর পর্যন্ত আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে আগামী তিন বছরের জন্য আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের সভাপতি হিসেবে রাহবারে বায়তুশ শায়খ আল্লামা মুহাম্মদ আব্দুল হাই নদভী এবং সাধারণ সম্পাদক হাফেজ আমান উল্লাহসহ ৩১ জনের নাম ঘোষণা করা হয়।
আসরের নামাজের পর থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত আনজুমনে নওজোয়ান বাংলাদেশের নবগঠিত কেন্দ্রীয় কমিটির অভিষেক ও শাখা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আগামী তিন বছরের জন্য আনজুমনের নওজোয়ান বাংলাদেশ এর সভাপতি হিসেবে কাজী মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল হান্নান জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম সহ ৪৪ জনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে শপথ বাক্য পাঠ করান রাহবরে বায়তুশ শরফ মাওলানাা আব্দুল হাই নদবী হাফিজুল্লাহ। তিনি সম্মেলন উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ম্যাগাজিন ‘রেহনুমা’র মোড়ক উন্মোচন করেন।
কেন্দ্রীয় কমিটির অভিষেকের পর নওজোয়ানের নব গঠিত মাদার বডির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান আনজুমনে নওজোয়ান বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল হান্নান জিলানী।
কমিটির নির্বাহি সদস্য ও দেশের বিভিন্ন জেলা আগত প্রতিনিধি সদস্যদের নিয়ে সমাপনী বক্তব্য ও মুনাজাত পরিচালনা করেন রাহবারে বায়তুশ শরফ কেবলা।
রাহবারে বায়তুশ শরফ শায়খ আল্লামা মুহাম্মদ আব্দুল হাই নদভী বলেন, বায়তুশ শরফ শরীয়ত ভিত্তিক একটি তরিকতের প্রতিষ্ঠান। তরিকতের মৌলিক বিষয় হলো—উপকারী জ্ঞান অজর্ন করা। যে জ্ঞান দ্বারা মানুষ উপকৃত হয় সে জ্ঞান অর্জন করা। আত্মার পরিশুদ্ধি, অন্তরের পরিচ্ছন্নতার জন্যই তরিকত।
আরও সহজভাবে যদি বলি—আমাদের জীবনের যাবতীয় কাজ কর্মকে খাঁটি নিয়তে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য, আল্লাহকে পাওয়ার জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দেওয়ার শিক্ষা অর্জনই তরিকত। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ভালো কাজ করতে হবে, কোনো মানুষকে খুশি করার জন্য নয়, এটাই তরিকতের শিক্ষা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের পীর-মুর্শিদের নেক নজর, রুহানী ফয়েজ বরকত দোয়া আমাদের দান করুন। আমরা যেন আমাদের পীর মুর্শিদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলতে পারি সেজন্য আল্লাহ কাছে দোয়া করি। উনাদের যে স্বপ্ন ছিল—সারা দেশের বায়তুশ শরফ প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটা মাস্টার প্ল্যানের আওতায় এনে কাজ করা। আমরা সেটি করছি। সমাজ সেবা অধিদপ্তরের অধীনে চট্টগ্রামে প্রায় চার হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মসজিদ ভিত্তিক মানব কল্যাণে কাজ করে বায়তুশ শরফ একটি অনন্য প্রতিষ্ঠানের স্থান অর্জন করেছে।
দিন ব্যাপী আয়োজনের একটি সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ফরিদুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) ওয়াহিদুল আলম ও সহ-সমাজসেবা অফিসার (কার্যালয়-২) মোহাম্মদ আলমগীর।
উপস্থিত ছিলেন আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব মর্তুজা সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক হাফেজ আমান উল্লাহ, নুরুল ইসলাম, মাওলানা মামুনুর রশিদ নূরী,প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু সালেহ মুহাম্মদ ছলিমুল্লাহ, আনজুমনে নওজোয়ান বাংলাদেশের সভাপতি, কাজী আবদুল হান্নান জিলানী,সিনিয়র সহ-সভাপতি হুজুর কেবলা (রাহঃ)এর ছোট সাহেবজাদা মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুল কাইয়ুম, সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফসহ আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশ ও আনজুমনে নওজোয়ান বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্যবৃন্দ।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।