বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন মানুষ ঘরে থাকতে পারেনি: ভূমিমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেছেন, সারাদেশে নৌকার জোয়ার, উন্নয়নের কারণে এই জোয়ার। উন্নয়ন আরও হবে। দলমত ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমি আপনাদের পাশে ছিলাম, আগামীতেও থাকব। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে আমাদের ঘরে থাকতে দেয়নি, কিন্তু আমি কাউকে কষ্ট দিইনি। তবে কেউ যদি অন্যায় করে; দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে; তাদের ছাড় দেওয়া হবেনা।

তিনি বলেন, বিএনপির আমলে এ বারখাইনের সরওয়ার জামাল নিজাম ক্ষমতায় থাকাকালীন মানুষ ঘরে থাকতে পারেনি। সাধারণ মানুষদের ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে হয়েছে তাদের হামলা ও মিথ্যা মামলা থেকে রক্ষা পেতে। তবে আমরা ক্ষমতায় থাকাকালীন কাউকে ঘর ছেড়ে থাকতে হয়নি। এটায় হচ্ছে শেখ হাসিনা সরকার।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বারখাইন এলাকায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ভূমিমন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচন নিয়ে বিএনপি-জামাত অনেক ষড়যন্ত্র করতেছে। তারা বলছে ভোট কেন্দ্রে মানুষ যাবে না। তাই তাদেরকে দেখিয়ে দিব ভোটও হবে, কেন্দ্রে মানুষও যাবে। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু যুদ্ধের ডাক দিয়েছেন, তারা কষ্ট করেছেন বলে আজ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছেন এবং আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থেকে মানুষ আজ বিভিন্ন ভাতাসহ বাংলাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে।

তিনি বলেন, আগে মানুষ মারা গেলে সম্পত্তি নিয়ে মারিমারি শুরু হতো, আমি ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে দলিল যার জমি তার আইন পাস করে সব সমস্যার সমাধান করে দিয়েছি। কিন্তু আপনারা বন্টননামা করে নেবেন তখন আর সমস্যা হবে না।

অন্যায়ভাবে জমি দখলের কোন সুযোগ নেই বলে উল্লেখ করে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, আমি আইন তৈরি করে এসব করে দিয়েছি। নিজের নামে ৬০ বিঘার ওপর জমি রাখতে পারবে না এই আইনও আমি পাস করে গিয়েছি। এখন আপনাদের দায়িত্ব কেন্দ্রে কেন্দ্রে গিয়ে নৌকায় ভোট দেবেন। এই দায়িত্ব আপনাদের।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম. জাহাঙ্গীর আলম এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শামীমের যৌথ সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন—উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য এস এম আলমগীর চৌধুরী, সাবেক সভাপতি বাহাউদ্দিন খালেদ শাহজি, উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী, ভূমিমন্ত্রীর একান্ত সচিব রিদ্ওয়ানুল করিম চৌধুরী সায়েম, যুগ্ম সম্পাদক সুগ্রীব মজুমদার দোলন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন চৌধুরী মুরাদ, দপ্তর সম্পাদক জয়নাল আবেদীন হেলাল, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক জাহেদুর রশিদ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক মো. নুর হোসেন, সদস্য মুজিব আনসারী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রিদোয়ানুল হক রহিম।

এর আগে, আজ বিকেলে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর জুলধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে নির্বাচনী জনসভায় ভূমিমন্ত্রী বলেন, আপনারা আমাকে না চাইলে আমি ভোটেও দাঁড়াবো না। আমি কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিই নাই। সেটা আমার দলের মানুষ হলেও ছাড় দিই নাই। আমি রাজনীতিতে এসেছি জনগণের সেবা করার জন্য। মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য না।

ভোট

জুলধা ইউনিয়ন আওয়ামী সভাপতি আমির আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ রফিক আহমদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান তালুকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হায়দার আলী রনি।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী মানুষের কষ্ট বুঝেন। প্রধানমন্ত্রী যখন আনোয়ারায় জনসভা করেছেন তখন আপনারা রোদের মধ্যে বসে থাকতে দেখে তিনি কষ্ট পেয়েছেন। তাই তিনি আমাকে বলেছেন, আপনাদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আল্লাহর রহমতে কমে আসবে। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীরও কষ্ট হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমার বাবার স্বপ্ন ছিল কর্ণফুলীকে উপজেলা করার আমি সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছি। সেটা সোজা কথা না। কর্ণফুলীর মানুষ এখন উপজেলার মালিক। আগামীতেও এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।