বিএনপি নেতা জামাল হত্যা—২০ বছর পর কাসেম চেয়ারম্যানের আত্মসমর্পন

চট্টগ্রামের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ও বিএনপির নেতা জামাল উদ্দীন চৌধুরীকে অপহরণের পর হত্যার মামলার আসামি কাসেম চেয়ারম্যান আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেছেন। আদালত তা নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। জামাল উদ্দীন চৌধুরী হত্যার ২০ বছর পর হাতে হাতকড়া পরে কারাগারে যেতে হলো ফটিকছড়ির কাঞ্চননগরের সাবেক এই চেয়ারম্যানকে।
দীর্ঘদিন বিদেশে পালিয়ে থাকা আসামি ফটিকছড়ির কাঞ্চননগরের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাসেম দেশে ফিরে মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম মহানগর পঞ্চম অতিরিক্ত দায়রা জজ নারগিস আক্তারের আদালতে আত্মসমর্পন করেন। পঞ্চম অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতেই জামাল উদ্দিন হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। এই মামলায় মোট ৮৪ জন সাক্ষীর মধ্যে মাত্র তিনজনের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

আবুল কাসেম চৌধুরী প্রকাশ কাসেম চেয়ারম্যান গত ২২ নভেম্বর উচ্চ আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করলে আদালত ৬ সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পনের আদেশ দেন। জামিনের মেয়াদ শেষ হলে কাসেম আজ আদালতে আত্মসমর্পন করে আবার জামিন আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি অ্যাডভোকেট রিদওয়ানুল বারী চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, আবুল কাসেম চৌধুরী হলো জামাল উদ্দীন হত্যা মামলার প্রধান আসামি। তার হুকুমে এক কোটি টাকার বিনিময়ে জামাল উদ্দীন হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। তিনি বিশ বছর পলাতক থাকার পর সংশ্লিষ্ট আদালতে না এসে উচ্চ আদালতে গিয়ে জামিন নিয়েছেন।
আজ আদালতে জামিন চাইলে আমরা বিরোধীতা করেছি। আদালত জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

২০০৩ সালের ২৪ জুলাই রাতে চট্টগ্রান নগরীর চকবাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফেরার পথে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহসভাপতি জামাল উদ্দিন অপহৃত হন। পরে তাঁর কঙ্কাল উদ্ধার হয়। সংসদ নির্বাচনে আনোয়ারা থেকে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জামাল উদ্দিন।
জানা যায়, এই মনোনয়ন ঠেকাতে ও কোটি টাকা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তাঁকে অপহরণ করা হয়েছিল। টাকা পেতে দেরি হওয়ায় খুন করা হয়েছিল তাঁকে।

২০১৪ সালে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি সুলতান ড্রাইভার জিজ্ঞাসাবাদে তার জবানিতে উঠে আসে কাসেম চেয়ারম্যানের নাম। সুলতানের বরাতে পুলিশ জানায়, জামাল উদ্দিনকে কাঞ্চননগরের গহিন পাহাড়ে নিয়ে যায় সুলতান। কাসেম চেয়ারম্যানের নির্দেশে গুলি করে জামালকে হত্যা করা হয়। গুলি করে হত্যার আগ পর্যন্ত কালা মাহবুব, লম্বা মাহবুব ও টেংরা ওসমান জামাল উদ্দিনের সঙ্গে ছিলেন।

আজ আদালত থেকে কাসেম চেয়ারম্যানকে পুলিশের ভ্যানে উঠানোর সময় তার অনুসারীরা ‘কাসেম ভাইয়ের ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ স্লোগান দিতেও দেখা যায়।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।