চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) গাছ পাচারকারীদের আশির্বাদ হয়ে যেন বৃষ্টি নামে। ভারি বৃষ্টি হলেই বেড়ে যায় গাছ পাচারকারীদের দৌরাত্ম। ভারী বর্ষণের সুবিধা নিয়ে পাহাড়ি ছড়া ব্যবহার করে গাছ পাচারে মেতে উঠে চক্রটি।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে গাছ পাচারের চিত্র দেখা গেলেও এখন পর্যন্ত ধরাছোঁয়ার বাইরে পাচারকারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরের বিভিন্ন সময় গাছগুলো কেটে পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় ও ছড়ার ধারে জমিয়ে রাখা হয়। পরবর্তীতে বর্ষাকালে ভারি বর্ষণের সুযোগে কাটা গাছগুলোকে ছেড়ে দেয়া হয় ছড়ার স্রোতে। অপরদিকে ছড়ার বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করে পাচারকারীদের লোক। গাছগুলো স্রোতে ভাসতে ভাসতে তাদের নিকট পৌছালে তারা গাছগুলোকে আটকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আব্দুর রব হলের পেছনে ঘুরতে গিয়ে এভাবে ছড়ার স্রোতে গাছ ভেসে আসতে দেখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। দেখতে পেয়ে শিক্ষার্থীরা পানিতে নেমে একে একে ২৩টি কাটা গাছ উদ্ধার করেন তারা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গাছগুলো সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তরের নিকট হস্তান্তর করেন।
মেহরাব সাকিব নামে গাছ উদ্ধারকারী শিক্ষার্থীদের একজন বলেন, আমরা বৃষ্টিতে ফুটবল খেলে বঙ্গবন্ধু হলের সুইমিং পুলে গোসল করতে গিয়েছিলাম। আমরা মোট ২০ জন ছিলাম। গোসল করে ফেরার পথে ছড়া দিয়ে অনেকগুলো কাটা গাছ ভেসে আসতে দেখি। অনেক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে দেখার পরও দেখি গাছ শেষ হচ্ছে না, আসতেই আছে। এমন সময় আমরা পানিতে নেমে গাছগুলো আটকাতে শুরু করি। আধাঘন্টার মধ্যে আমরা ২৩টি গাছ আটকাতে সক্ষম হই। পরে প্রক্টরিয়াল বডি এসে গাছগুলো নিয়ে যায়।
এর আগে গত রোববার (৬ আগস্ট) স্লুইস গেইট এলাকা থেকে একজন ব্যক্তিকে স্রোতে ভেসে আসা গাছ আটকে পাড়ে জমা করতে দেখা গেছে।
তবে এর পেছনে মূল কারিগর কে বা কারা সে বিষয়ে সঠিক তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম শিকদার বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছগুলো উদ্ধার করে নিরাপত্তা দপ্তরে পাঠিয়ে দিয়েছি। তবে এর পেছনে কে বা কারা জড়িত সে বিষয়েও কোনো খবর পাইনি। গাছগুলো বৈধ নাকি অবৈধ সে বিষয়েও আমরা জানিনা। কেউ যদি গাছের মালিকানা দাবি করতে আসে তাহলে আমরা যাচাই বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
তিনি আরো বলেন, আমি প্রক্টর হওয়ার পর প্রথমবার এরকম ঘটনা দেখেছি। এর আগের ঘটনা সম্পর্কে আমার জানা নেই। আমরা এ নিয়ে কাজ করব। অন্যায়ভাবে গাছ পাচারকারীদের ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নেব।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।