ভাঙন আতঙ্কে রাইখালী নারানগিরি মুখ পাড়ার দেড় শতাধিক পরিবার

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ২ নম্বর রাইখালী ইউনিয়নে অবস্থিত নারানগিরি মুখ পাড়া। যেই পাড়াটিতে প্রায় দীর্ঘবছর ধরে দেড় শতাধিক পরিবার বসবাস করে আসছে। এছাড়া পাড়াটিতেই রয়েছে কাপ্তাই উপজেলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ও।

জানা গেছে, পাড়াটির দক্ষিণ দিকে বয়ে গেছে নারানগিরি খাল। যেই খালটি সরাসরি যুক্ত হয়ে পাশ্বস্ত কর্ণফুলী নদীর অংশে মিশেছে। এদিকে ভারি বর্ষণ কিংবা উজানে পানির স্রোত বৃদ্ধি পেলেই নারানগিরি খালে পানির পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। যার ফলে পানির চাপ সইতে না পেরে নারানগিরি খাল সংলগ্ন পাড়াটির অংশে ভাঙন শুরু হয়। ইতিমধ্যে ওই পাড়ার বেশ কিছু অংশ তীব্র ভাঙনের কবলে পড়ছে।

এদিকে গত কিছুদিন পূর্বেও চলমান ভারি বর্ষণে উক্ত পাড়ার বেশ কয়েকটি ঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে আরো বহু পরিবার। এদিকে এই ভাঙনের পরিমাণ যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে যেকোন সময় পাড়ার দক্ষিণ অংশ নারানগিরি খালে বিলীন হয়ে যাওয়া আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

সম্প্রতি নারানগিরি মুখ পাড়ায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নারানগিরি মুখ পাড়ার বাসিন্দা মাসাচিং মারমার বাড়ির শৌচাগার ও পানির কল ইতিমধ্যে সাম্প্রতিক টানা বর্ষণে পানির স্রোতে নারানগিরি খালে ধসে পড়ে গেছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী আরেক বাসিন্দা লোকা বড়ুয়ার বাড়ির বসার ঘর ও রান্না ঘরের বেশ কিছু অংশ খালের গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে তারা এক প্রকার ঘরবাড়ি হারানোর আশংকায় দিনতিপাত করছে।

এদিকে নারানগিরি পাড়ার প্রধান কারবারি ক্যহ্লাপ্রু মারমার বাড়ীর কদম গাছ এবং বাঁশ ঝাড়ের মাটি খালের পানির স্রোতে ধসে পড়ে গেছে। এবং যে কোন মূহুর্তে নিজেদের থাকার মাটির ঘরটিও নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশংকা করছেন তিনি। এতে পাড়াবাসী এক প্রকার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে বলে তিনি জানান।

নারানগিরি বড় মুখ পাড়ার আরেক বাসিন্দা মংহ্লাচিং মারমা বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের পাড়াবাসীর একটা দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ হতে আরসিসি ব্লক দিয়ে ভাঙ্গনের মুখ হতে এই পাড়াকে রক্ষা করা ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। এবং দ্রুত সময়ে ব্যবস্থা না নিলে ভাঙন আরো বাড়বে বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শৈবাল সরকার এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মাক্রাইচিং মারমার কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, বিগত ৫ বছর যাবৎ নারানগিরি খালের কারণে নারানগিরি মুখ পাড়ায় ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪টি ঘর ও ১টি রাস্তা খালের গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

এছাড়া কিছুদিন আগেও ২টি ঘরের কিছু অংশ খালে ধসে পড়ে গেছে, যে কোন মূহুর্তে ঘর ২টি সম্পূর্ণ ধসে যেতে পারে। এছাড়া খালের কিনারায় আরো ৯টি ঘর ধ্বসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। অনতিবিলম্বে যদি পানি উন্নয়ন বোর্ড হতে এই পাড়ার নারানগিরি খালের দক্ষিণ অংশে ব্লক নির্মাণ করা না হয়, তাহলে এক সময় পাড়াটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে।

এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। এবং আমরা খুব শীঘ্রই এলাকাটি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করবো।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।