ভারতীয় সিরিয়ালের স্টাইলে স্ত্রীকে খুন করে চট্টগ্রামে আত্মগোপন, ধরলো র‌্যাব

যৌতুকের দাবীতে স্ত্রীকে নির্যাতনের মাধ্যমে খুন করে চট্টগ্রাম এসে আত্মগোপনে থাকা রাজন নামের এক খুনীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তার আসামি রাজন মিয়া কুমিল্লার তিতাস থানার মঙ্গলকান্দি গ্রামের শুক্কুর আলীর ছেলে। তাকে চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ থানার সী ওয়ার্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে র‌্যাব-৭এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নূরুল আবছার বলেন, রাজন তার স্ত্রী শুকতারাকে মোটরসাইকেলে চেইন হাতে মুড়িয়ে ঘুষির আঘাতে খুন করার অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর থেকে সে আত্মগোপনে ছিল। আমরা তাকে ফয়’স লেক সি ওয়ার্ল্ড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছি।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নিহত ভিকটিম শুকতারা এবং আসামী রাজন মিয়া ২২ জানুয়ারি ২০১২ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। ভিকটিমের স্বামী রাজন মিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ মাদকাসক্ত ছিল। মাদক সেবনের টাকার জন্য সে ভিকটিমের সাথে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ ও মারধর করতো। ভিকটিম তার স্বামীকে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে প্রায়ই তার স্বামী তাকে গালাগালি এবং মেরে ফেলার হুমকি দিত। এছাড়া ভিকটিমের শ্বশুর-শ্বাশুড়ী এবং দেবরও যৌতুকের টাকার জন্য তাকে গালমন্দ করতো।

নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় গত ১২ এপ্রিল রাত আনুমানিক ১১টায় রাজন মিয়া টাকার জন্য ডেকসেটে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে তার শিশু সন্তানদের সামনে ভিকটিমকে মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে রাজন মিয়া মোটর সাইকেলের চেইন হাতে পেচিয়ে ভিকটিমের মুখে এলোপাতাড়ি ঘুষি মারতে থাকে। এ সময় ভিকটিমের শ্বশুর-শ্বাশুড়ী এবং দেবর ভিকটিমকে গালমন্দ ও মারধর করতে সহযোগিতা করে। পরবর্তীতে রাত ৩টায় রাজন মিয়ার মা ভিকটিমের মাকে ফোনে জানায় ভিকটিম শুকতারা গুরুতর অসুস্থ্য তাকে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ভিকটিমের বাবা তাৎক্ষণিক হাসপাতালে গিয়ে দেখেন কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেছেন। শুকতারার মৃতদেহ হাসপাতালের বেডে পড়ে আছে।

উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানায় ঘাতক রাজন মিয়া এবং তার মা, বাবা ও ভাইকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

গ্রেপ্তারকৃত আসামী রাজনকে তিতাস থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান র‌্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. নূরুল আবছার।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।