ভূয়া চিকিৎসকের ফাঁদে অসংখ্য রোগী, হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা

কক্সবাজারের পেকুয়ায় মগনামা ইউনিয়নে সাইফুল নামে এক ভূয়া ডাক্তার অপচিকিৎসা দিয়ে অসংখ্য রোগীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অসংখ্য রোগী ।

শনিবার (২ এপ্রিল) ভূল চিকিৎসার শিকার হয়ে মগনামা মরিচ্যাদিয়া এলাকার কুলছুমা বেগম (৩৩) নামের এক গৃহবধূ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

এই ঘটনায় কুলছুমা বেগমের স্বামী বাদী হয়ে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মগনামা মরিচ্যাদিয়া এলাকার মো.ইউনুছের স্ত্রী কুলছুমা বেগম। কুলছুমার স্বামী ইউনুছ চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, ‘স্ত্রী অসুস্থ হলে প্রথমে স্ত্রীকে নিয়ে পেকুয়ায় ‘ডাক্তার’ জিয়ার কাছে গিয়েছিলাম। জিয়া সবকিছু দেখে আমার স্ত্রীর রক্তশুন্যতার কারনে একটি স্যালাইন লিখে দেন। পরে ওই স্যালাইনটি দেওয়ার জন্য সাইফুলের চেম্বারে গেলে সে চার ঘন্টার স্যালাইনটি ৩০ মিনিটে শেষ করে। স্যালাইনটি দেওয়ার কিছুক্ষন পরই স্ত্রীর পুরো শরীর ফুলে ডায়রিয়া শুরু হয়ে যায়। ভুল চিকিৎসার প্রতিবাদ করলে উল্টা গালিগালাজ করে পরিণতি খারাপ হবে বলে হুমকি দেয়।’

ইউনুছ বলেন, ‘ডাক্তার’ সাইফুল আমাকে বলেন স্যালাইন পুশ করা আমার কাজ, কোন প্রেসক্রিপশন দেখা আমার কাজ না। সে ডাক্তার বলে দাবি করে কিন্তু একটি স্যালাইন দেওয়ার নিয়ম না জেনেও এই এলাকায় মানুষের সাথে চিকিৎসার নামে প্রতারণা করে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে চিকিৎসাপত্রে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার লিখা জিয়া উদ্দিন চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, রোগীটা আমার কাছে আসছিল। আমি তাকে রক্তশুন্যতার কারনে একটি স্যালাইন লিখে দিয়েছি। স্যালাইনটি শরীরে সঞ্চালন হতে চার ঘন্টা সময় লাগবে। কিন্তু গ্রামের সাইফুল নামের এক হাতুড়ে ডাক্তার আমার প্রেসক্রিপশন না দেখে চার ঘন্টার এই স্যালাইনটি (৩০) ত্রিশ মিনিটে শেষ করে দিয়েছে। এতে করে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে।

ভূয়া চিকিৎসকের ফাঁদে অসংখ্য রোগী, হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা 1

পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত চার দিন ধরে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে কুলছুমা বেগমকে। কিন্তু তার অবস্থা অবনতি হওয়ায় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির নির্দেষ দেন। কুলছুমা দুই ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তানের জননী।

চট্টগ্রাম খবরের হাতে আসা জিয়া উদ্দিনের চিকিৎসা প্যাডে লিখা আছে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার। কিন্তু তার নামের সাথে আছে ডিএমএফ (ঢাকা)। বিএমডিসির নিয়ম অনুযায়ী এমবিবিএস এবং বিডিএস ছাড়া কেউ নামের আগে ডাক্তার লিখতে পারেন না। ডাক্তার পরিচয়ে রোগীও দেখতে পারেন না।

পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) চট্টগ্রাম খবরকে বলেন, মগনামা কাজী মার্কেট এলাকায় এক হাতুড়ে ডাক্তারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।