পদবঞ্চিত ছাত্রলীগের আন্দোলন নিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশের পরেই অনির্দিষ্টকালের জন্য ডাকা অবরোধ প্রত্যাহার করেছে চবি ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে পদবঞ্চিতরা।
শিক্ষা উপমন্ত্রীর কানে যে আন্দোলনের খবর পৌঁছেছে তাতেই তারা সন্তুষ্ট হয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
এদিকে ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই কিছু ঘটলেই আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাসের মূল ফটক অবরোধ ও শটল ট্রেন আটকানোর সুযোগ পায় বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিণ আখতার। সার্বিক বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় এসব কথা বলেন তিনি।
উপাচার্য বলেন, শহর থেকে ক্যাম্পাস দূরে হওয়ায় ও ক্যাম্পাসের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আন্দোলনকারীরা শাটল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে দিতে পারে। তারা যেহেতু আমাদের শিক্ষার্থী তাই আমরা চাইলেই সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না।
কারণ আমরা দেখেছি সরাসরি কোনো ব্যবস্থা নিলে অন্য একটি পক্ষ তাদের উস্কে দেয়৷।ফলে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে চলে যায় এবং ঘটনা আরো বড় হয়ে যায়। তাই আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে বিষয়গুলো সমাধানের চেষ্টা করি।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ক্ষোভ প্রকাশে করে সকালে ফেসবুকে পোস্ট করেন।
তিনি এতে লিখেন, “ছাত্র সংগঠনের পদপদবীর বিষয়ে কোনো দাবি-দাওয়া থাকলে সংগঠনের যেকোনো কর্মী, নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করতে পারে। কোনো সাংগঠনিক দাবি থাকলে সেটি সংগঠনকে সাথে নিয়ে সমাধান করা যায়।
কিন্তু সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করা, ভাংচুর করা, অপহরণ, করা, অপরাধের হুমকি দেয়া, হত্যার হুমকি দেয়া কোনোভাবেই ছাত্র সংগঠনের আদর্শিক কর্মীর কাজ হতে পারেনা। যারা এসব করছে তারা নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থেই অরাজকতা করছে, এদের কাছে সংগঠন বা শিক্ষার মূল্য আছে বলে মনে হয়না। নিজেদের সাংগঠনিক দাবিতে অপরাধমূলক সহিংসতা যারা করছে, তাদের বিষয়ে সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অত্যন্ত কঠোর হওয়া প্রয়োজন।”
এর পরেই সোয়া ১১ টার দিকে আন্দোলন স্থগিত ও পরে দুপুর একটায় সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন নেতাকর্মীরা।
তারা জানান, শিক্ষা উপমন্ত্রীর কানে তাদের দাবি-দাওয়া পৌঁছাতে পেরেছেন, এতেই তারা সন্তুষ্ট। তাই আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে আন্দোলনকারী ছাত্রলীগকর্মী আল আমিন বলেন, ছাত্রলীগে যেমন বীর সেনানীর জন্ম হয় তেমনি জন্ম হয় বিশ্বাস ঘাতকের। আপনারা সকলে অবগত আছেন দীর্ঘ তিনবছর পর গত ৩১ জুলাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যেখানে স্থান পেয়েছে অধিকাংশই অছাত্র, বিবাহিত, পারিবারিকভাবে বিএনপি, জামাত শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
ত্যাগী, নির্যাতিত এবং যারা দীর্ঘ সময় ধরে প্রগতির পতাকাবাহী সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রম দিয়েছেন, তাদেরকে কৌশলে বাদ দেয়া হয়েছে। তাদের মূল্যায়নের দাবিতে পদবঞ্চিতরা আন্দোলন শুরু করেছে। যা গত তিনদিন ধরে চলমান ছিলো।
তিনি আও বলেন, বিজয় পরিবারের একমাত্র অভিভাবক আমাদের নেতা মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ভাই আমাদের দাবিগুলো সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। প্রশাসনের অনুরোধ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আমাদের আন্দোলন এখানেই প্রত্যাহার করছি। আমাদের একটা প্রতিনিধি টিম আমাদের নেতা নওফেল ভাই ও কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের দায়িত্বরতদের সাথে দেখা করে উনারা যা সিদ্ধান্ত দিবেন তা আমরা নির্দিধায় মেনে নিব।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।