মশিউরের আস্তানায় র‌্যাবের হানা- অস্ত্রসহ ৫ সন্ত্রাসী আটক

২৭ মামলার আসামি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তালিকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী কাজী মশিউর রহমানের জঙ্গল সলিমপুরের আস্তানায় আবারও হানা দিয়েছে র‌্যাব। অভিযানে এক ডজন দেশী-বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করার পাশাপাশি ৫ সন্ত্রসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব-৭ অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ। এর আগে শনিবার রাতে পরিচালিত সীতাকুণ্ড থানার জঙ্গল সলিমপুরের অভিযান তদারকি করেন তিনি।

অভিযানে র‌্যাব ১০টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, একটি বিদেশী আগ্নেয়াস্ত্র, ২২ রাউন্ড গুলি ও একটি ধারালো ছুরি, মিলিটারি গেজেট, মিলিটারি পোশাক, মিলিটারি বাইনোকুলার ও অবৈধ ধাতব মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাব অভিযানে গেলে তাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি গুলি ছোড়াঁ হয়। আত্মরক্ষায় র‌্যাব ১২৯ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে বলে জানায় র‌্যাব। রাত ৯টায় শুরু হওয়া অভিযান চলে রাত ৩টা পর্যন্ত।

এসময় র‌্যাব রফিকুল ইসলাম মালু, সিরাজুল ইসলাম মোহাম্মদ হাসান, জামাল শেখ ও মিজানুর রহমান কদর নামে ৫ সন্ত্রাসীকে পাকডাও করে। জাামল শেখ ও মিজানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০টি করে মামলা রয়েছে। হাসান ৭টি ও সিরাজ ৫টি মামলার আসামি। রফিকুল ইসলাম মালুর নামে ৪টি মামলা রয়েছে।

আটক সন্ত্রাসীদের নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে গেলে কারাগারে থাকা সন্ত্রাসী মশিউরের ছেলে শিবলুর নেতৃত্বে র‌্যাবের ওপর হামলা হয় জানিয়ে র‌্যাব অধিনায়ক বলেন, একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী র‌্যাবকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে, লাঠি সোটা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে র‌্যাবের উপর অতর্কিত আক্রমন করে। এসময় তারা গ্রেপ্তার আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে পাহাড়ী এলাকা থেকে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এই পরিস্থিতিতে র‌্যাবও পাল্টা গুলি ছোড়ে। সন্ত্রাসীরা গুলি করতে করতে দূর্গম পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়। নিজেদের জীবন ও অস্ত্র ও গোলাবারুদ রক্ষার্থে র‌্যাবও বিভিন্ন অস্ত্র দ্বারা ১২৯ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে।

তিনি আরও জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে র‌্যাব এলাকাটিকে ঘিরে রেখে পরবর্তীতে অধিক ফোর্স নিয়ে সন্ত্রাসীদের আস্তানায় ব্যাপক তল্লাশী শুরু করে। অভিযানটি রাত ৩টা পর্যন্ত চলতে থাকে। সন্ত্রাসীদের আক্রমন ও ইট পাটকেল ছোঁড়ায় কয়েক জন র‌্যাব সদস্য কিছুটা আঘাতপ্রাপ্ত হয়।

তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে থানায় হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানায় র‌্যাব।

প্রসঙ্গত, গত বছর ৬ ডিসেম্বর রাতে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদসহ কাজী মশিউর রহমাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। মশিউর নিজেকে চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিতেন। তার বিরুদ্ধে পাহাড়ে খাসজমি দখল করে কেনাবেচা এবং সেখানে অপরাধের সাম্রাজ্য গড়ে তোলার অভিযোগ আছে। থানায় আছে তার নামে ২৭টি মামলা।

মশিউর গ্রেপ্তার হওয়ার সময় কোমরে একটি বিদেশি পিস্তল ছিল। হাতে থাকা ব্যাগ থেকে একটি ওয়ান শ্যুটার গান, দু’টি এলজি, একটি দোনলা বন্দুক, একটি ম্যাগজিন ও ১৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছিল র‌্যাব। ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর মশিউরকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছিল র‌্যাব। সে সময় গ্রেফতার এড়াতে মশিউর বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।

এফএম

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।