মানুষের কাছে ‘মানবতার ফেরিওয়ালা’

মানুষ মানুষের জন্য এ কথাটির মর্মার্থ বুঝতে হলে মিশতে হবে একজন নিঃস্বার্থবান মানুষের সাথে। চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর জুলধার বাসিন্দা মের্সাস প্যারাগন ব্রিক ফিল্ডের মালিক হাজি মোহাম্মদ ফারুক। একজন সফল ব্যবসায়ি, দানবীর ও সমাজ সেবক হিসেবে এলাকায় পরিচিত। নিজেকে সমাজসেবামূলক কাজে জড়িয়ে সাধারণ মানুষের আস্থাভাজন হয়ে উঠেছেন।

ঘুম থেকে উঠে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত পরোপকারে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন এই মানবিক মানুষ। স্বপ্ন তাঁর অসহায় মানুষদের জন্য কাজ করার। সবসময় অসহায় অবহেলিত মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকেন তিনি। শুধু তাই নয় যে কোনো সামাজিক সমস্যায় তাকে পাশে পাওয়া যায়।করোনাকালে তিনি মানবতার পরিচয় দিয়েছেন। অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন নিজের।

সম্প্রতি এলাকায় নিজের কোটি টাকা মূল্যে জমিতে সড়ক ও মসজিদ নির্মাণ করে দিয়ে মানবতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন হাজি মোহাম্মদ ফারুক। যা সমাজের মানুষের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। নিজ অর্থায়নে স্কুল, মসজিদ-মাদ্রাসা, ধর্মিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।

তাঁর সাদামাটা জীবন যাপন আর জনসেবামূলক কর্মকান্ডে ‘সত্যিকার ভালো মানুষ’ হিসেবেই জানেন এলাকার মানুষ। পূর্ব পুরুষ হাজি আবদুর রহমান সহর আলী মুন্সি জামে মসজিদের নামে ৪ কানি ৭ গন্ডা জায়গা দান করে গেছেন। যার বর্তমান বাজার মুল্য ৫ কোটি টাকারও বেশি। এই মসজিদের পরিচালনার সকল ব্যয় বহন করে গেছেন তিনি। বর্তমান তাঁর ওয়ারিশ হাজি মোহাম্মদ ফারুক মসজিদ পরিচালনার সকল ব্যয় বহন করে যাচ্ছেন। এছাড়াও সহর আলী মুন্সি জামে মসজিদের সভাপতি ও মতোয়াল্লী তিনি।

হাজি মোহাম্মদ ফারুকের পিতা মৃত হাজী তোফাজ্জল আহমদ দ্বীনি শিক্ষার জন্য এলাকায় মঈনীয়া রহমানিয়া দাখিল মাদরাসা নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। তোফাজ্জল আহমদের পিতা আবদুর রহমানের নামেও রয়েছে রহমানিয়া দাখিল মাদরাসা ও এতিমখানা। প্রতিষ্ঠান গুলো যেন আজীবন চলতে পারে তিনি ব্যাংক এ মাদরাসার নামে ফিক্সড ডিপোজিট করে একটি নিদিষ্ট পরিমান টাকা জমা রেখে যান। পরবর্তীতে খাজা মঈনউদ্দিন চিশতি নামের  সঙ্গে মিলিয়ে মঈনিয়া রহমানিয়া দাখিল মাদরাসা করা হয়। সে প্রতিষ্ঠান গুলোর পরিচালনা কমিটির সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।

এছাড়াও মধ্য ইছানগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নির্মানাধীন ৩ তলা ভবনে ১ গন্ডা ২ কড়া জায়গা দানসহ স্বেচ্ছায় অবশিষ্ট  জায়গার সল্পতা রইয়েছে জেনে তাও দান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির আজীবন দাতা সদস্যও তিনি। হাজী মোহাম্মদ ফারুক তাঁর পিতা হাজী তোফাজ্জল আহমদ এলাকার মানুষের যাতায়াতের জন্য নিজ জায়গার উপর দিয়ে একটি নতুন রাস্তা নির্মান করে দেন। রাস্তাটি মৃত হাজি তোফাজ্জল আহমদের নামে নামকরণ করা হয়। যে রাস্তা দিয়ে প্রায় দেড় শতাধিক পরিবারের চলাচল।

হাজি মোহাম্মদ ফারুকের বলেন, ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনবিধান। ইসলামের সঙ্গে চলতে হলে ইসলামে দেখানো প্রতিটি বিষয় মেনে চলতে হয়। মানবসেবার জন্য মসজিদ-মাদ্রাসা, রাস্তাঘাট নির্মাণসহ নানা জনকল্যাণ মুলক কাজ করাও বিশেষ সাওয়াবের কাজ। একটি সুন্দর কাজ সম্পাদন করতে দরকার ভালো মানসিকতার। মানুষের সেবা করেই আমি আত্মতৃপ্তি পাই। মানুষের উপকার করতে পারলে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগে। তাই নিজেকে আর্তমানবতার সেবায় নিয়োজিত রেখেছি। এটাই আমার কর্মময় জীবন। এভাবেই সারাজীবন জনগণের সেবা করে পাশে থাকতে চাই।

তিনি বলেন, নিজের এলাকার মেধাবী ও অসহায় শিক্ষার্থীদের জন্য দান করা মাদ্রাসার জায়গার সামনের তোফাজ্জল আহমদ নামে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছে রয়েছে। এছাড়াও শীঘ্রই হাজী তোফাজ্জল আহমদ কিন্ডারগার্টেন স্কুল নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মানের কাজ শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।