মালেশিয়ার উচ্চশিক্ষা প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে ইএমজিএস

ইউরোপের দেশগুলোর মতো উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের পছন্দের সারিতে প্রথমদিকে উঠে আসছে মালেশিয়া। দেশটির উন্নত এবং আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তুলছে। এর পেছনে কাজ করে যাচ্ছে এডুকেশন মালেশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেস (ইএমজিএস)। মালেশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটি দেশটির শিক্ষাখাতের প্রচার-প্রসার এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য সরবরাহ, অপার লেটার প্রাপ্তি, ভিসা প্রসেসিংসহ যাবতীয় সব কাজ করে যাচ্ছে ইএমজিএস।

বুধবার (২৪ মে) চট্টগ্রাম নগরীর হোটেল পেনিনসুলায় অনুষ্ঠিত হয় মালেশিয়ায় উচ্চশিক্ষা বিষয়ক মেলা। ইএমজিএসের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই মেলায় অংশ নেয় ১৭টি মালেশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন এডুকেশন মালেশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেসের প্রতিনিধিরা।

মালেশিয়ার উচ্চশিক্ষা প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে ইএমজিএস 1

প্রতিষ্ঠানটির রিজিওনাল মার্কেটিং ম্যানেজার মি. মঈন বলেন, ২০১২ সালের ১৩ এপ্রিল ইএমজিএসের যাত্রা শুরু হয়। শুরু থেকেই আমরা মালেশিয়ার উচ্চশিক্ষা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মালেশিয়ার প্রতি প্রচুর আগ্রহ দেখেছি, তাই এখানে আমাদের কার্যক্রমও বেশি হয়। আমরা আজকে চট্টগ্রামে এসেছি ঢাকায়ও আমাদের উচ্চশিক্ষা মেলা অনুষ্ঠিত হবে। এখানে শিক্ষার্থীদের থেকে প্রচুর সাড়া পাচ্ছি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরাও মুগ্ধ শিক্ষার্থীদের আগ্রহ দেখে।

তিনি বলেন, আমরা শুধু বাংলাদেশে নয় পুরো বিশ্বে মালেশিয়ার শিক্ষা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা ওয়ান-স্টপ-সার্ভিসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রসেসিংয়ে কাজ করে থাকি। মালেশিয়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৮৮টির বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন আছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কিছু সরকারি আবার কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তরাজ্য, চায়নাসহ বাইরের দেশে শাখা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা মালেশিয়ায় উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বেশি আগ্রহী। আমাদের দেশের বিদেশি শিক্ষার্থীদের তালিকায় সবার ওপরে থকে বাংলাদেশের নাম। কোন কোন বছর এটি টপ পজিশন হোল্ড করে আবার কোন কোন বছর সেরা ৫ এর মধ্যে থাকে। সাউথ এশিয়ার মধ্যে মালেশিয়ায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে যাওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীদের তালিকায় বাংলাদেশের নাম প্রথমে রয়েছে। মালেশিয়ায় এখন প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন। প্রতিবছর ৩-৪ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মালেশিয়ায় পড়াশোনা করতে যায়।

মালেশিয়ার উচ্চশিক্ষা প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে ইএমজিএস 2

এক প্রশ্নের জবাবে মি. মঈন বলেন, আপনি যদি ভাবেন কোথায় পড়াশোনা করতে যাবেন আর অর্থ উপার্জন করতেদ যাবেন তাহলে সেটা সঠিক নয়। সরকারিভাবে পড়াশোনা করতে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের জন্য মালেশিয়ায় কোন পার্ট টাইম জবের অনুমোদন নেই। তবে পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীরা ভালো চাকুরি পেতে পারে। মালেশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে অনেক উপরে। এখন কেউ মালেশিয়া থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও কাজ করতে পারবে। এ সময় তিনি ভালো ফলাফল এবং বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্কলারশিপও দেয় বলে জানান।

এদিকে প্রতিষ্ঠানরটির আয়োজনে মালেশিয়ায় উচ্চশিক্ষা মেলায় সকাল থেকেই ছিলো শিক্ষার্থী অভিভাবকদের ভিড়। সরেজমিনে দেখা গেছে, শিক্ষার্থী-অভিভাবকের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো মেলা প্রাঙ্গন। স্টলে স্টলে শিক্ষার্থীরা ঘুরে ঘুরে জেনে নিচ্ছেন পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরাও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের যাবতীয় তথ্য দিয়ে সহায়তা করছেন।

মালেশিয়ার উচ্চশিক্ষা প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে ইএমজিএস 3

অনুষ্ঠানটির আয়োজনে থাকা বিএসবি-ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান লায়ন এম কে বাশার জানান, মেলায় মালেশিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছেন। তারা নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের কাছে তুলে ধরছেন। মেলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যে কোন বিষয়ে উপস্থিত প্রতিনিধিদের থেকে জেনে নিতে পারছেন। তাছাড়া ভিসা সংক্রান্ত তথ্য, আবেদন, খরচ—সবকিছু সম্পর্কে ধারণা মিলছে এই মেলা থেকে।

মালেশিয়ার উচ্চশিক্ষা প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে ইএমজিএস 4

মেলায় সর্বমোট ১৭টি মালেশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো—এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন (এপিইউ), টুংকু আব্দুল রহমান ইউনিভার্সিটি অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি (টিএআর ইউএমটি), সানওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়, কোলেজ প্রফেশনাল বাইতুমাল কুয়ালালামপুর (কেপিবি-কেএল), সেগি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ, পেনিনসুলা কলেজ, ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ এভিয়েশন মালয়েশিয়া, কলেজ এমডিআইএস মালয়েশিয়া, ওপেন ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া, ইউনিভার্সিটি জিওমাটিকা মালয়েশিয়া (ইউজিএম), টেলর বিশ্ববিদ্যালয়, মাশা বিশ্ববিদ্যালয়, লিমককউইং ইউনিভার্সিটি অফ ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়া (ইউকেএম), জিয়ামেন ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া, ইউনিটার আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া কেলান্টান (ইউএমকে)।

মালেশিয়ার উচ্চশিক্ষা প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে ইএমজিএস 5

প্রসঙ্গত, শিক্ষাখাতে বাংলাদেশ-মালেশিয়া একটি দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক গড়ে তুলছে। এডুকেশন মালেশিয়া গ্লোবাল সার্ভিসেস (ইএমজিএস) দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। এটি মালেশিয়ার উচ্চশিক্ষা প্রসারে কাজ করে যাচ্ছে সেই সাথে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়ে থাকে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।