‘মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ পেলে ছাড় নয়’

‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ আশ্রয়কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো ‘ভয়ংকর’ বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন–অর–রশীদ। তিনি বলেন, ‘মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হবে। যদি তিনি এগুলো করে থাকেন, তবে ভয়ংকর অপরাধ করেছেন। প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

এর আগে প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে বুধবার (১ মে) রাতে ঢাকার মিরপুর থেকে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেপ্তার কের ডিবি। পরে রাতেই ঢাকার মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন অতিরিক্ত কমিশনার হারুন–অর–রশীদ।

মিল্টন সমাদ্দার ঢাকার মিরপুরে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে একটি আশ্রয়কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। তার ভাষ্য, সেখানে আশ্রয়হীন বৃদ্ধ ও শিশুদের আশ্রয় দেওয়া হয়। সম্প্রতি সাভারে জমি কিনে আশ্রয়কেন্দ্রের স্থায়ী নিবাস বানানো হয়েছে। সম্প্রতি কিছুদিন ধরে মিল্টনের বিরুদ্ধে নানা প্রতারণার অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। মিল্টন ফেসবুকে ভিডিও দিয়ে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এরই মধ্যে তার সঙ্গে কাজ করা এবং সংশ্লিষ্ট কয়েকজন তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনেন।

পুলিশ কর্মকর্তা হারুন–অর–রশীদ সাংবাদিকদের জানান, ‘মিল্টন সমাদ্দারের বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ উঠেছে। তার প্রতিষ্ঠিত আশ্রয়কেন্দ্রে অসহায় শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে আসতেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের পর ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে তিনি স্বীকার করেছেন, সেখানে (আশ্রয়কেন্দ্র) অপারেশন থিয়েটার (অস্ত্রোপচারকেন্দ্র) আছে। যদি অপারেশন থিয়েটার থাকে বা হাসপাতাল থাকে, সেটির লাইসেন্স থাকতে হয়। কিন্তু তিনি এ–সংক্রান্ত কোনো লাইসেন্স দেখাতে পারেননি।’

হারুন–অর–রশীদ বলেন, ‘মিল্টনের উত্থান হচ্ছে বাবাকে পেটানোর পর এলাকাবাসী তাকে এলাকাছাড়া করে। তারপর শাহবাগে এসে একটি ফার্মেসিতে কাজ করেন। সেখানে ওষুধ চুরির কারণে তাকে বের করে দেওয়া হয়। একটা পর্যায়ে কিছু লেখাপড়া করেন। পরে মিঠু হালদার নামের এক নার্সকে বিয়ে করেন। বিয়ে করার পর স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুরে ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ নামে একটি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেন।’

বেশির ভাগ লাশ রাতে দাফন করার বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা মিল্টন জবাব দিয়েছেন, রাতে লাশ দাফন না করলে মানুষ তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। এবিষয়ে তাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান ডিবি প্রধান হারুন।

আজ বৃহস্পতিবার মিল্টনকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ রিমান্ড চাইতে পারে বলে জানা গেছে।