মো. রিপন (৩২)—চট্টগ্রামের পটিয়ার বাসিন্দা থাকেন নগরী বাকলিয়া থানাধীন এনামের কলোনী এলাকায়।মোটরসাইকেল চুরিই যেন রিপনের নেশা ও পেশা। যেখানে যান সেখান থেকেই চুরি করে আনেন অন্তত একটি মোটরসাইকেল। এমনকি চুরির মামলায় আদালতে এসেও ছাড় দেননি। আদালত প্রাঙ্গণ বা আশেপাশের এলাকা থেকে নিয়ে গেছেন বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল।
অবশেষে রিপনসহ চক্রের ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৪ অক্টোবর) নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন মেরিনার্স রোডস্থ এস আলম বাস ডিপুরর বিপরীত পাশে পাকা রাস্তার উপর থেকে রিপন ও পরে বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে ১৩টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয় বলেও জানান তিনি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মো. রিপন (৩২)। সে চট্টগ্রামের পটিয়ার কোলাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল আলীমের ছেলে। আরেক আসামি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামস্থ মৃত মনু মিয়ার ছেলে আব্দুল কাদের জিলানী অভি (২৬)। অপরজন কক্সবাজারের মহেশখালী থানাধীন মাতারবাড়ি ইউনিয়নের ৪ নম্বরস্থ মো. মোস্তাকের ছেলে সজিবুল ইসলাম (২১)।
পুলিশ জানায়, বুধবার চক্রের মূলহোতা রিপনকে নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন মেরিনার্স রোডস্থ এস আলম বাস ডিপুরর বিপরীত পাশে পাকা রাস্তার উপর থেকে একটি চোরাই মোটরসাইকেলসহ গ্রেপ্তার কারা হয়। পরবর্তীতে রিপনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, সে চোরাইকৃত মোটরসাইকেলগুলো কুমিল্লার আব্দুল কাদের জিলানী ও কক্সবাজারের জেলার সজিবুল ইসলামের নিকট বিক্রয় করে। রিপনের স্বীকারোক্তি মোতাবেক কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানা ও নাঙ্গলকোর্ট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আব্দুল কাদের জিলানীকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার হেফাজত হতে ৮টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চোরাই মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। পরে রিপনের দেওয়া তথ্য মোতাবেক কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সজিবুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত হতে ৪টি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চোরাই মোটরসাইকেল জব্দ করে। এ ঘটনায় আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চক্রাকারে চলে চুরির ঘটনা
পুলিশ জানায়, আসামী রিপনের বিরুদ্ধে আদালতে ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল চুরি মামলা বিচারাধীন আছে। সে এসব মামলার হাজিরা সংক্রান্ত কাজে বা আদলতের কৌশুলীর সাথে দেখা করার জন্য প্রায় সময়ই চট্টগ্রাম মহানগরের কোর্ট বিল্ডিং এলাকায় আসে। আদালতে কাজ শেষ করে বাড়িতে যাওয়ার সময় কোর্ট বিল্ডিং এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা হতে লক করা মোটরসাইকেল বিশেষ কায়দায় তৈরি ‘মাস্টার কবু’ ব্যবহার করে দ্রুততম সময়ে লক খুলে চুরি করে নিয়া যায়। চোরাই মোটরসাইকেলগুলো বিভিন্ন সময় কুমিল্লার আব্দুল কাদের জিলানী ও কক্সবাজারের সজিবুল ইসলামের কাছে বিক্রয় করে। বিক্রির জন্য সেখানে গিয়েও খালি হাতে ফিরে না রিপন। সেখান হতে আসার সময় ১টি মোটরসাইকেল চুরি করে সেটি সজিবুল ইসলামের কাছে বিক্রয় করে। আবার সজিবুল ইসলামের কাছে চোরাইকৃত মোটরসাইকেল বিক্রয়ের জন্য গিয়ে আরেকটি মোটরসাইকেল চুরি করে তা কুমিল্লার আব্দুল কাদের জিলানীর কাছে বিক্রি করে। এভাবে চক্রাকারে চলে রিপনের চুরি-ক্রয়-বিক্রয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মোটরসাইকেল চোর চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম ও আশপাশ এলাকায় বিপুল সংখ্যক মোটরসাইকেল চুরি এবং ক্রয়-বিক্রয় করে আসছিলো।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।