২০১৭ সালে উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি হয়। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়ে ওই জেলার মানুষ। সে সময় তাদের কষ্টের চিত্র দেখে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেন চট্টগ্রাম জেলার ছয়জন তরুণ। এরপর নিজেদের জমানো কিছু অর্থ ও পরিচিতদের থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন তারা। পরে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে রওনা দেন উত্তরবঙ্গের দিকে। সেখানে পৌঁছে বন্যার্তদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন।
সেই যাত্রা থেকেই তারা যুক্ত হলো মানবিক কাজে। পরে তারা ছয়জন মিলে নিজেদের কার্যক্রম আরও জোরালো করেন ‘শিখর’ নামক সংগঠন প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে। ব্যক্তিভিত্তিক মানবিক কাজের মধ্যে যাত্রা হয় এ সংগঠনের। একের পর এক মানবিক কাজ ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রামের প্রতিটি জেলায়। যেখানে মানুষের দুঃখ সেখানে তাদের দ্বারে গিয়ে দাঁড়ায় সংগঠনটি৷
এছাড়াও রক্তের অভাবে মানুষের মৃত্যু ও কষ্ট দেখে তারা যুক্ত করে নেগেটিভ ব্লাড ব্যাংক। যখন মানুষের রক্ত প্রয়োজন হয় তখন রক্ত দিতে ছুঁটে যায় এ সংগঠনের তরুণরা। পথশিশু ও শিক্ষা বঞ্চিতদের নিয়ে চালু করে চন্দনাইশ উপজেলায় স্বপ্নপূরণ পাঠশালা। যেখানে বিনামূল্যে লেখাপড়া করে শতাধিক গরীব শিক্ষার্থী। রমজানে পথচারী, মেডিকেলের রোগী ও অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার ও শীত বস্ত্র বিতরণ কার্যক্রমসহ যেকোনো পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে দাঁড়ায় এ সংগঠনটি। মানবিক কার্যক্রম এলাকায় দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে তারা।
সংগঠনটির মানবিক কার্যক্রম দেখে যুক্ত হয় বিভিন্ন উপজেলার৷ তরুণরা। সেই শুরুর যাত্রার ছয়জন সদস্য থেকে আজ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবকদের সংগঠনে পরিণত হয়েছে শিখর। মানবিক কাজের চলার পথে বিভিন্ন বাঁধা আসলেও পিছনে ফিরে তাকায়নি তারা। সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজ সপ্তম বছরে পা রেখেছে সংগঠনটি।
শিখর সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট রিফাতুল ইসলাম জানান, ছয়জন সদস্য দিয়ে শুরু করে আজ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবকদের সংগঠন হয়েছে। আমাদের কার্যক্রম চট্টগ্রামে বিভিন্ন জেলায়। এছাড়া দেশে বড় ধরনের দুর্যোগ হলে মানবিক কার্যক্রম করা হয়েছে, ভবিষ্যতেও করা হবে। যেখানে মানুষের কষ্ট সেখানে আমরা। আমাদের লক্ষ্য শিখর থেকে শিখরে পৌঁছা। এতে সবার সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করি। সবাইকে ৬ষ্ঠ বর্ষপূর্তির শুভেচ্ছা জানাই।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।