রমজানে ওমরা পালনে হজের সওয়াব

রমজান মাস ফজিলতের মাস। রমজান মাসে আমল করলে অন্যান্য মাসের তুলনায় ৭০ গুণ বা তার চেয়েও বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। আর রমজানে ওমরা পালনের গুরুত্ব অপরিসীম। রাসুল (সা.) বলেন, রমজানে ওমরা পালন করা হজের সমতুল্য ইবাদত (সুনানে ইবনে মাজা, হাদিস নং-২৯৯৩)।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, নবীয়ে করিম (সা.) হজ থেকে এসে উম্মে সিনান আনসারিকে বললেন, তুমি কেনো হজ করনি? সে বললো অমুকের পিতা অর্থাৎ তার স্বামীর কারণে তার চাষাবাদের দুটি উট ছিল। একটি দিয়ে সে হজ করেছে অপরটি আমাদের জমি চাষ করেছে। নবীয়ে করিম (সা.) বললেন, নিশ্চয়ই রমজান মাসের ওমরাহ হজ আমার সাথে বড় হজ করার সমান। (বোখারী শরীফ- ১৭৬৪, মুসলিম শরীফ- ১২৫৬)

অপর বর্ণনায় নবীয়ে করিম (সা.) বলেছেন, যখন রমজান আগমন করে তখন ওমরাহ হজ কর, কারণ রমজান শরীফের উমরাহ হজ বড় হজের সমান। (বোখারী- ১৬৯০, মুসলিম- ১২৫৬)

পবিত্র কোরআনুল করিমে আল্লাহ পাক ঘোষণা করেন, তোমরা আল্লাহের উদ্দেশে পবিত্র হজ এবং ওমরাহ সম্পূর্ণ কর। ( সুরা বাকারা- ১৯৬)

রমজানের রোজা আসলে হজের পূর্বাভাস। ওমরাহের সাথে তুলনা করলে ফরজ হজকে হজে আকবর অর্থাৎ বড় হজ এবং ওমরাহকে হজে আসগর অর্থাৎ ছোট হজ বলা যায়।

আল্লাহর রাসুল (সা.) এক হাদিসে বলেছেন, ‘এক ওমরার পর আরেক ওমরাহ— উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের (গুনাহর) জন্য কাফফারাস্বরূপ। আর জান্নাতই হলো কবুল হজের প্রতিদান। (বুখারি, হাদিস : ১৭৭৩)

তাই সুযোগ ও সামর্থ্য থাকলে ওমরাহ করা উচিত। এছাড়াও অধিক ওমরাহ করার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দার রিজিকে বরকত দেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) হাদিসে বলেন, ‘তোমরা ধারাবাহিক হজ ও ওমরাহ আদায় করতে থাকো। এ দুটি আমল দারিদ্র্য ও গুনাহ বিদূরিত করে দেয়। যেমন—ভাটার আগুনে লোহা ও সোনা-রুপার ময়লা-জং দূরীভূত হয়ে থাকে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৮১০)

জীবনে একবার ওমরা করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। তা ছাড়া তা যখনই করা হোক, তার জন্য প্রতিদান ও বরকত রয়েছে। আর রমজানে ওমরা পালন করা মুস্তাহাব।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর পথে জিহাদকারী, হজ পালনকারী এবং ওমরা পালনকারী তারা সবাই আল্লাহর প্রতিনিধি। আল্লাহ তাদের ডাক দিয়েছেন, তারা সেই ডাকে সাড়া দিয়েছে। সুতরাং তারা আল্লাহর কাছে যা কিছু প্রার্থনা করবে, আল্লাহ অবশ্যই তাদের তা প্রদান করবেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-২৯৯৩)

পবিত্র রমজান মাসে ওমরাহ পালন করলে হজের সমতুল্য সওয়াব পাওয়া যায়। এই জন্য যাদের সুযোগ ও সামর্থ্য রয়েছে, তারা সম্ভব হলে রমজানে পবিত্র ওমরাহ পালন করা উচিত। এতে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও ইবাদত সুন্দরভাবে পালনের পাশাপাশি বিপুল সওয়াব লাভও হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সুন্দরভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টি মোতাবেক রমজান কাটানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএফ

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।