রাঙামাটিতে কলা চাষে কৃষি বিপ্লব, বাজার মূল্য হাজার কোটি টাকা ছাড়াল

রাঙামাটি জেলায় কলা চাষে যুক্ত হয়েছেন প্রায় এক হাজার কৃষক। কেউ গড়ে তুলেছেন একক বাগান, কেউ করছেন কলা সহ অন্যান্য ফসল। পাহাড়ি মাটি ও আবহাওয়া কলা চাষের জন্য অনুকূল হওয়ায় কৃষকেরা ঝুঁকছেন এদিকে। পরিচর্যার খরচ কম, কীটনাশকের প্রয়োজনও তুলনামূলক কম।

সাজেকের বাজেক্কে চাকমার বাগানে রয়েছে এক হাজারের বেশি গাছ। তিনি প্রতি সপ্তাহে ২০০ ছড়ি কলা বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। অপরদিকে, বাঘাইছড়ির সমীরণ চাকমা আট একর জমিতে চাষ করে এরই মধ্যে এক লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন। আগামী মাসগুলোতে আরও কয়েক লাখ টাকার বিক্রির আশা করছেন তিনি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় বর্তমানে ১১,৯০০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হচ্ছে। প্রতি হেক্টরে ৩০ মেট্রিক টন উৎপাদন ধরে বার্ষিক ৩.৫৭ লাখ মেট্রিক টন কলা উৎপাদিত হয়, যার বাজারমূল্য ২,৮৫৬ কোটি টাকা।

তবে দুঃখজনকভাবে এই বিশাল অর্থনীতিতে কৃষি বিভাগের কোনো প্রণোদনা নেই। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ দেওয়ান জানান, সরকারি কোনো নির্দেশনা না থাকলেও কিছু কর্মকর্তা ব্যক্তিগত উদ্যোগে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছেন। তাঁরা কৃষকের কাছ থেকে ১–৪ টাকা দরে কলা কিনে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করছেন, প্রতি কলায় ২–৪ টাকা পর্যন্ত লাভ করছেন। ব্যবসায়ী সংগঠিতভাবে বাগান থেকে সরাসরি কলা সংগ্রহ করে বাজারজাত করছেন।

উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ দেওয়ান বলেন, কলা কৃষিপণ্য হলেও এটি চাষে কৃষি বিভাগের কোনো ভূমিকা নেই। কলাচাষিদের কোনো সহায়তা কিংবা প্রণোদনা আমরা দিই না। সরকারিভাবে এর কোনো নির্দেশনাও নেই। তবে নিজ উদ্যোগে কর্মকর্তারা কৃষকদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে কলা চাষের বিশাল সম্ভাবনা আছে। পরিকল্পিতভাবে বাণিজ্যিক চাষ হলে এবং সরকারি সহযোগিতা মিললে উৎপাদন কয়েক গুণ বাড়ানো সম্ভব। শুধু দেশের চাহিদা নয়, রপ্তানিও করা যাবে।

মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।