রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার সামিরা বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ৪টি দোকান, বসতঘর ও ২টি মোটরসাইকেল পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন জনপ্রতিনিধি ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।
সোমবার (২০ নভেম্বর) ভোর ৪টার দিকে চায়ের দোকান থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে বলে ধারণা এলাকাবাসীর। আগুন প্রায় আড়াই ঘণ্টা স্থায়ী ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোর চারটা সময় চায়ের দোকানে আগুনের শিখা দেখা যায়। হঠাৎ করে চারদিকে আগুনের শিখা ছড়িয়ে পড়লে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এতে ৪টি দোকান ও ১টি বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা যায়, সোনাধন চাকমা ৪র্থ শ্রেনীতে পড়ে। তার ৩য় প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা চলছে। ভোরে অগ্নিকাণ্ডে তার স্কুলের বই ও ড্রেসসহ সব কাপড়-চোপড় পুড়ে যাওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। তার মা বিথীকা চাকমাসহ পুড়ে যাওয়া বই খুঁজছেন।
মাইকেল চাকমা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। তারও চলছে বার্ষিক মূল্যায়ন পরীক্ষা। বইপত্র পুড়ে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পরেছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত কনিকা চাকমা ক্ষুদ্র ব্যবসা করে। তার স্বামীসহ পরিবারের সদস্য চারজন। দুই সন্তান। একজন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে, অন্যজন এবার এসএসসি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। তাদের বইপত্র কাপড়-চোপড় পুড়ে গিয়ে হতাশ হয়ে পরেছে তারা।
তার মা কনিকা চাকমা বলেন, কাপড় সেলাই করে সুখে সংসার চলছিল। ব্যবসার পরিধি বাড়াতে গেল সপ্তাহে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসার ঋণ নিয়ে মালামাল দোকানে তুলেছি। অগ্নিকাণ্ডে সব শেষ হয়ে গেল। কিস্তি কিংবা ছেলেদের পড়ালেখার খরচ কিভাবে চালাবো কিছু বুঝে উঠতে পারছিনা।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহর নেতৃত্বে ভাইস চেয়ারম্যান রিটন চাকমা, জুরাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইমন চাকমা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরির্দশন করেন। এছাড়া, পৃথকভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আল্পনা চাকমা, থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুস সালাম ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরির্দশন করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তাদের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।