চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় আমন ধানের ন্যায্য মূল্য
পেয়ে কৃষকদের মাঝে বেড়েছে উৎসাহ। আর তাই এবার বাড়তি আমেজে শুরু হয়েছে বোরো আবাদের কর্মযজ্ঞ। ইতিমধ্যেই অনেক কৃষক বীজতলা তৈরির কাজ শেষ করে রোপণের জন্য মাঠ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার কৃষকরা জানিয়েছে, শিগগিরই রোপণের কার্যক্রম শুরু হবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়ায় গেলে আমন মৌসুমে ৭৭ হাজার ১৭৫ মেট্টিক টন ধান উৎপাদিত হয়েছে। আগে যেখানে বাজারে সাধারণত ২৫-২৬ টাকা কেজি দামে বিক্রি হতো, সেখানে আমনে এবার ধান কেজি প্রতি ৩৩-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাই ধানের ভালো দামে উৎসাহ বাড়ছে কৃষকদের।
উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আমন মৌসুমে ১৫ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছিলো। তবে বোরো মৌসুমে ৯ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাকি জমিতে সবজি আবাদ এবং কিছু জমি সেচ সুবিধার অভাবে পতিত থেকে যায়। রোপণের জন্য ৪৫০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হচ্ছে। উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ৬ হাজার ৪৭০ জন কৃষকের মাঝে প্রণোদনা হিসেবে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছিল।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের শস্যভান্ডার খ্যাত রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিলে গিয়ে দেখা যায়, বোরো চারা রোপণের জন্য মাঠ প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা। কেউ সেচ দিচ্ছেন, কেউবা বীজতলা পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। অনেকেই আবার বাজার থেকে চারা রোপণের জন্য শ্রমিক নিয়ে আসছেন।
এসব বিষয়ে গুমাইবিলে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমারের জানান, সেচ সুবিধা থাকায় এবং ধানের দাম পাওয়ায় গুমাইবিলে এবারো ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হবে। এরমধ্যে বিলের ১৫০ হেক্টর আমন বীজতলা করা হয়েছে। এবার বিলে উচ্চ ফলনশীল উফশী জাত ব্রি-ধান- ৬৭, ৭৪, ৮৮, ৮৯, ১০০ ও কাটারি এবং হাইব্রিড জাতের মধ্যে এসএলএইটএইচ, হীরা-১, ২, ছক্কা, জনক রাজ, এপিআই-১, ২ আবাদ হবে।
গুমাইবিলের কৃষক কামাল হাজী জানান, আট কানি জমিতে আমন আবাদ করে গড়ে ৬ মেট্টিক টন করে ধান পেয়েছিলাম। এরমধ্যে মোটা ধান ৩৩০ টাকা এবং চিকন ধান ৩৫০ টাকা আড়ি (১০ কেজি) দামে বিক্রি হচ্ছে। এবার বোরোতেও একই পরিমাণ জমিতে বোরো আবাদ করবো৷ এজন্য প্রয়োজনীয় বীজতলা তৈরি করার কাজ চলতেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কৃষকদের সর্বাত্মক সহায়তা করা হচ্ছে। এরইমধ্যে বীজতলা করার কাজও শেষ পর্যায়ে। উপজেলার কোথাও কোথাও রোপণ কার্যক্রমও শুরু হয়ে গেছে। তবে আগামী ২০ জানুয়ারির পর পুরোদমে রোপণ কার্যক্রম শুরু হবে।
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।