রাঙামাটির রাজস্থলীতে একটি বন্য হাতি প্রসবকালে শাবকসহ মারা গেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের কাইংটংপাড়ার একটি ফলবাগানে মাদি হাতি ও শাবকের মরদেহ দেখতে পায় এলাকাবাসী। বেলা ৩টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে মা হাতি ও শাবকটি মাটিচাপা দেওয়া হয়।
রাজস্থলী উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের সহকারী চিকিৎসক চিরজিৎ চাকমা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মা হাতিটি প্রসবকালে যন্ত্রণায় কাতর হয়ে মারা যায়। নবজাতক শাবকটিও মারা গেছে। দুই দিন আগে হাতি ও শাবকটির মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুর্গম এলাকা হওয়ায় লোকজন বিষয়টি টের পায়নি। মারা যাওয়া মাদি হাতিটির বয়স ২০ বছরের ওপরে হতে পারে। মৃত হাতিটির ওজন তিন টন ও দৈর্ঘ্য ১০-১২ ফুট।’
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাঁরা সকালের দিকে ইউনিয়নের কাইংটংপাড়ার লোকজন বাগানে গেলে বনের মধ্যে হাতিটি শোয়া অবস্থায় দেখতে পান। হাতিটি নড়াচড়া না করায় মৃত ভেবে স্থানীয় বন বিভাগকে খবর দেন।
গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পুচিং মং মারমা জানিয়েছেন, রাজস্থলী উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নে গত এক মাস ধরে ৯টি বন্য হাতি খাদ্যের সন্ধানে কাইথাকপাড়া, চুশাকপাড়া, ছাইখ্যংমুখপাড়া, তমসেংপাড়া, রেমাছড়া, তুলাছড়ি, হাজিপাড়া, মববইপাড়া, উগারিপাড়া, কাইংটংপাড়াসহ প্রায় ১৫টি পাড়ায় বন্য হাতির পালটি বিচরণ করছে। এসব এলাকায় স্থানীয় লোকজনরে বসতঘর, বাগানের ফলফলাদি, কলাবাগান, সেগুনবাগান নষ্ট করে দেয়।
কাপ্তাই পাল্পউড বন বিভাগের উপবন সংরক্ষক মো. সাজ্জাদুজ্জামান সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গাইন্দ্যা ইউনিয়নের কাইংটংপাড়া এলাকায় একটি বন্য হাতি প্রসবকালে মা ও তার বচ্চাটি মারা গেছে। খবর পাওয়ার পর বন বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেছেন।
কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের রাজভিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারজ আল আমিন বলেন, ‘উপজেলার কাইথাকপাড়া পাহাড়ে একটি মাদি হাতি মারা গেছে। খবর পেয়ে বেলা ১টার দিকে বন বিভাগ, প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সহকারী চিকিৎসকসহ ঘটনাস্থলে যাই। পরে ময়নাতদন্ত শেষে হাতি ও শাবকটি মাটিচাপা দেওয়া হয়।’
ফারজ আল আমিন আরও বলেন, ‘হাতিটির শরীরে কোনো গুলি বা আঘাতের চিহ্ন নেই। সেখানে বিদ্যুতের ফাঁদও নেই। চিকিৎসকেরা বলছেন, বাচ্চা প্রসবকালে অসুস্থ হয়ে হাতিটি মারা গেছে। এ ঘটনায় রাজস্থলী থানায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।’
মন্তব্য নেওয়া বন্ধ।